নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২২, ১৩:০৮ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২২, ১৩:২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশ আজ।

সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা দুপুর ২টায়। তবে সকাল থেকেই ঢাকা মহানগরসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড-খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশস্থলে সমবেত হচ্ছেন। ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ফকিরাপুল বিজয়নগর, কাকরাইল এলাকা ছাড়িয়েছে। ১২টার পর থেকেই পল্টন, কাকরাইল, নয়াপল্টন, বিজয়নগর এলাকায় বন্ধ রয়েছে গাড়ি চলাচল।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ আয়োজনে এই সমাবেশ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে বিকেল ৫টায়।

সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাক দিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।

সমাবেশকে ঘিরে  মোড়ে মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

দীর্ঘদিন মাঠে জোরালো আন্দোলন-কর্মসূচি নেই বিএনপির। প্রায় আট মাস পর ঢাকার রাজপথে বড় সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি।

গত সোমবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং দলের দুই নেতা হত্যার প্রতিবাদে দলটি দুই দিনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

কর্মসূচির আয়োজক ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি।

একই দাবিতে শুক্রবার সারা দেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।

বিএনপির নেতারা বলছেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর খাদ্যপণ্য নিয়ে যে বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবিলা করা যেত, যদি সরকারের সে দক্ষতা থাকত। কিন্তু তারা উন্নয়নের নামে একদিকে বড় বড় প্রকল্প নিয়েছে এবং পদে পদে সেসব প্রকল্পের ব্যয় অস্বাভাবিক বাড়িয়ে সেখান থেকে লুটপাট করেছে। নেতাদের অভিযোগ, শুধু বিদ্যুতের ‘কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট’ থেকেই ৭৮ হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে।

বিএনপির নেতারা সভা-সমাবেশে যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তার মূলে থাকছে সরকারের দুর্নীতি। সম্প্রতি ঢাকায় এক সমাবেশেও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের বিরুদ্ধে ‘অর্থ পাচারসংক্রান্ত’ একটি নথি প্রদর্শন করেন। ফখরুল বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী গত সাত বছরে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে ২৭০ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকে হিসাব আছে ২৩৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলারের। বাকি ৩০ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার কোথায় গেল। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা একটা বিরাট ডাকাতি, বিরাট লুটের একটা চিত্র।’

সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। ভোলায় গুলি করে মেরেছে, গত সোমবার শাহবাগে বাম ছাত্রসংগঠনের কর্মীদের নির্মমভাবে পিটিয়েছে। এভাবে সরকার আন্দোলন দমন করতে চায়। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হবে না।’

সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর বিএনপির আয়োজনে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জনসমাবেশ হয়। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে সেই কর্মসূচি ছিল।

বৃহস্পতিবারের সমাবেশের বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘ঢাকা শহরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা থেকে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এই সমাবেশে যোগ দেবে। শুধু তাই নয়, ঢাকাবাসীরা যারা প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তারাও এই সমাবেশে আসবেন বলে আমরা ধারণা করছি। এই সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগম ঘটবে।’

ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘স্মরণকালের লোকসমাগম ঘটবে বৃহস্পতিবারের সমাবেশে। সেভাবে আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। ঢাকা মহানগর ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা যেভাবে এই সমাবেশে আসবে তাতে দুপুরের মধ্যেই এই এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’

আমান বলেন, ‘আমাদের এই সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। ঐতিহাসিক এই সমাবেশের মাধ্যমে আমরা সরকারের কাছে বার্তা দেব-অনতিবিলম্বে ক্ষমতা ছেড়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/এফএ)