আমার বাবা হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করুন: লে. কর্নেল ইসমাইলের ছেলে

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২২, ১৪:০০ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২২, ১৪:২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

'আমার বাবা হাসি-খুশি মানুষ ছিলেন। উনি সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন সব সময়। কিন্তু বাবা আর আমাদের মাঝে নেই। আপনারা সবাই দোয়া করবেন আমার বাবা যেন হাসিমুখেই  জান্নাতে প্রবেশ করেন।'

 

র‌্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনের দ্বিতীয় জানাজায় কাঁদতে কাঁদতে এই আকুতি জানান তার বড় ছেলে আনান হোসেন।

 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় র‌্যাব সদরদপ্তরে শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে লে. কর্নেল ইসমাইলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তার সহকর্মীরা আবেগাপ্লুত ও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।

 

আনান হোসেন বলেন, 'আমার বাবা অনেক হাসি-খুশি ও ভালো মানুষ ছিলেন। বড় কোনো কারণ ছাড়া আমার বাবা কারো সঙ্গে কখনো রাগ করতেন না।'

 

বাবার স্মৃতি স্মরণ করে আনান বলেন, 'আমি প্রতিদিন কোচিং শেষে বাসায় ফিরে আশা করতাম বাবা-মা ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছেন অথবা টিভি রুমে বসে টিভি দেখছেন। আমি বাসায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গে বাবা যা-ই কিছু করছিলেন না কেন তা থামিয়ে আমাকে হাসিমুখে বলতেন  'বাবা, কেমন আছো'।'

 

বাবা অফিস থেকে ফেরার পর সব সময়ে আনানের রুমে গিয়ে তার খোঁজ নিতেন। আনান বলেন, “আমাকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে হাসি দিয়ে বলতেন ‘কেমন আছো বাবা, তুমি দুপুরে খেয়েছো নাকি’। বাবা কখনো আমার সঙ্গে রাগ করলেও পরে বলতেন ‘তোমার ভালোর জন্যই এমন করেছি, তুমি মনে কিছু কইরো না’।”

 

এ সময় অশ্রুসিক্ত আনান কান্না জর্জরিত কণ্ঠে তার বাবার জন্য সবার কাছে দোয়ার আবেদন করেন। আনান বলেন, ‘উনি বাবা হিসেবে অনেক অনেক ভালো ছিলেন। আমি আল্লাহর কাছে উনার থেকে ভালো বাবা আর চাইতে পারব না।’

‘আপনারা সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন বাবাকে জান্নাত নসিব করেন। উনি যেভাবে হাসিমুখে সবার সঙ্গে কথা বলতেন, উনি যেন সেভাবে হাসিমুখে জান্নাতে প্রবেশ করেন।’ বেলন আনান।

 

এর আগে বুধবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে সিঙ্গাপুর থেকে লে. কর্নেল ইসমাইলের মরদেহবাহী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে র‌্যাবপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন মরদেহ বুঝে নেন।

 

গত ২৭ জুলাই ঢাকার নবাবগঞ্জে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেল-২০৬ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ইসমাইল। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। তিনি বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

 

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/এসএস/মোআ)