অস্ত্রের মুখে তিন বছর ধরে গৃহবধূ ধর্ষণ, ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
গৃহবধূকে ধর্ষণে অভিযুক্ত বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন কুমার ঘোষকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে থানায় মামলা করায় অভিযুক্ত সুজনের পরিবার থেকে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর পরিবারকে ভয়ভীতি এবং হুমকি প্রদান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার স্বামী।
অন্যদিকে একই ঘটনায় সুজনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সোনাতলা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সংগঠনের নীতি-আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় সুজন কুমার ঘোষকে (সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সোনাতলা উপজেলা শাখা, বগুড়া) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো এবং সেই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সোনাতলা উপজেলা শাখা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামী জানান, সুজনের কথা না শুনলে স্বামী ও সন্তানদের হত্যা করা হবে এমন ভয়ভীতি দেখিয়েই এতদিন ধর্ষণ করা হয় তার স্ত্রীকে। তার স্ত্রী অনেক দিন সহ্য করলেও অতিষ্ঠ হয়ে তাকে জানালে তারা পরামর্শ করে থানায় মামলা করেন। থানা থেকে তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সুষ্ঠু বিচারের। তবে আজ (বুধবার) সকালে অভিযুক্ত সুজনের মা এবং বড় ভাই তাকে বাড়িতে এসে শাসিয়ে গেছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে গেছে এবং পাল্টা মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়ে গেছে। এরপর বিষয়টি তিনি পুলিশকে অবগত করেছেন বলে জানান।
সোনাতলা থানার এসআই ইয়ামিন আলী জানান, মামলার পর থেকেই তাকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে। তবে সে পলাতক থাকায় তাকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি। সোনাতলা থানা পুলিশ এবং ডিবি পুলিশের যৌথ অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়া আমাদের কাছে তথ্য আছে সুজনকে গ্রেপ্তারে র্যাব থেকেও চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেলে ছাত্রলীগ নেতা সুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ওই গৃহবধূ সোনাতলা থানায় একটি মামলা দায়ের। তার স্বামী বগুড়া শহরের এক তেলের ডিপোতে শ্রমিকের কাজ করেন। দিনমজুর স্বামীর অবর্তমানে রাতের বেলা ছাত্রলীগ নেতা সুজন কুমার ঘোষ তার ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গত তিন বছর ধরে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছিলেন। সর্বশেষ গত ২৫ জুলাইয়েও তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঘটনাটি গৃহবধূ তার স্বামীকে জানান। এছাড়া গত সোমবার (৮ আগস্ট) রাতে ওই গৃহবধূর একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি আইডি থেকে ছাড়া হয়। ভিডিও ক্লিপে ওই গৃহবধূ তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা করেন।
অভিযুক্ত সুজন কুমার ঘোষ সোনাতলা উপজেলার নামাজখালী গ্রামের সুভাষ ঘোষের ছেলে। মা সন্ধ্যা রানী সোনাতলা সদর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য।
(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/এআর)