যাত্রী কমেছে মোটরবাইকে, বিপাকে চালকরা

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২২, ১৭:১৩

আকিবুর রহমান, ঢাকাটাইমস

চলমান বৈশ্বিক সংকট, মুদ্রাস্ফীতির কারণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। ফলে অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন পাঠাও-উবার চালকরা। তারা বলছেন, আগের চেয়ে এখন যাত্রী সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এই সময় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি আমাদের জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর পান্থপথ সিগনালে যাত্রীর অপেক্ষা থাকা পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সী উবার, পাঠাও চালক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হচ্ছিল এই প্রতিবেদকের। দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, সরকার হঠাৎ করেই তেলের দাম বাড়িয়েছে, যার প্রভাব জ্বালানি তেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব কিছুর উপর পড়েছে। এমনিতেই যাত্রী সংকট। তার উপরে ভাড়া বেশি চাইলে মানুষ যেতে চায় না। আবার কম নিলে আমাদের কিছু থাকে না। এ অবস্থায় কী করব বুঝতে পারছি না।

বসুন্ধরা শপিং মলের সামনে মোটরসাইকেল নিয়ে যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা সুমন নামে এক যুবক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি আগে একটি দোকানে চাকরি করতাম। করোনায় চাকরি হারিয়ে এই পেশায় এসেছি। ভালই দিন যাচ্ছিল। তবে হঠাৎ করে তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে যাত্রী মিলছে না। যাত্রী পেলেও ভাড়া টাকা সমন্বয় করা যাচ্ছে না। সারাদিনে ৩০০ টাকার তেল নিলে এখন ৭০০ টাকাও ইনকাম করা যায় না। তাহলে আমরা কোন দিকে যাব, খাব কী? আগে ডাল-ভাত খেয়ে কোনোরকম দিন গেছে কিন্তু বর্তমানে সরকার সেই উপায়টাও রাখে নাই। এখন গাড়ি-বাড়ি বিক্রি করে গ্রামে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’  

একই ধরনের কথা বলেন, পরিবাগ মোড়ে যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা উবার চালক রাইসুল। বলেন, ‘দুই ঘণ্টা যাবৎ বসে আছি, যাত্রী নাই। সবাইতো চায় কম টাকায় যেতে। আমরা ১০ টাকা বেশি চাইলে তারা বাসে চলে যায়। এখন আমাদের কী করার আছে? কষ্টে আছি ভাই। কেমন করে যে চলবো সামনের দিনগুলো দুশ্চিন্তায় আছি!

রাজধানীর বাংলামোটরে উবার চালক ইসহাকের সঙ্গে কথা হয় টাকাটাইমসের। তিনি বলেন, সকাল থেকে দুপুর হয়ে গেলো, এখনও কোনো যাত্রী পাইনি। উবারেও কল আসেনি। বেশি ভাড়া চাইলেই রাগ করে চলে যায় যাত্রী। তেলের দাম বাড়ছে, তাই ভাড়াতো কিছুটা বাড়বেই। এটা যাত্রীরা মেনে নিতে চায় না। অন্যান্য সময় দুপুর পর্যন্ত দুই-তিনটা ট্রিপ মারি। আজকে বিকাল ৫টা বেজে গেছে, এখন পর্যন্ত একটা ট্রিপও মারতে পারি নাই। আয় না হলে কীভাবে সংসার চলবে জানি না।

আরেক রাইড শেয়ারিং চালক মফিদুল বলেন, অ্যাপসে ২৫ শতাংশ ভাড়া বেড়েছে। আগের তুলনায় কলও কমেছে। যাত্রীরা চুক্তিতে যেতে চায়। দাম বেশি চাইলে, অনেকেই যেতে রাজি হন না।

অন্যদিকে যাতায়াতের জন্য রাইড শেয়ারিং ব্যবহার করতেন, এখন কমিয়ে দিয়েছেন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগই অর্থনৈতিক কারণে অ্যাপসে চলাচল কমিয়েছেন। অনেকের খরচ বাড়লেও আয় বাড়েনি। এ কারণে যাতায়াতের খরচেও লাগাম টানতে হচ্ছে। আগে জরুরি যাতায়াতে অ্যাপস ব্যবহার করলেও এখন জরুরি কাজে যেতে হাতে সময় নিয়ে বাসে চড়েন।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/একে/কেএম)