সেনানিবাসে তৃতীয় জানাজা শেষে লে. কর্নেল ইসমাইলকে বনানীতে দাফন

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২২, ২০:৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

ঢাকা সেনানিবাসে তৃতীয় জানাজা শেষে রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে র‌্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনকে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সামরিক মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়।

এ সময় সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও মরহুম ইসমাইলের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় র‌্যাব সদর দপ্তরে শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সহকর্মীদের কাঁদিয়ে কর্মস্থল থেকে চিরবিদায় নেন র‌্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক ইসমাইল।

জানাজায় অংশ নেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, মরহুমের পরিবারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও র‌্যাব সদস্যরা।

র‌্যাব সদর দপ্তরে লে. কর্নেল ইসমাইলের কফিন আনার পর সেটি নিহত র‌্যাব সদস্যদের স্মৃতিতে নির্মিত ‘প্রেরণা ধারা’য় রাখা হয়। সেখানে পুলিশপ্রধানসহ বাহিনীর সদস্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানানো হয়। লে. কর্নেল ইসমাইলের কফিনে বিদায় জানানোর সময় তার সহকর্মীরা অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।

এর আগে বুধবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে সিঙ্গাপুর থেকে লে. কর্নেল ইসমাইলের মরদেহবাহী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে র‌্যাবপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন মরদেহ বুঝে নেন।

ওই দিন রাতেই প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার নিজ এলাকা রাজধানীর কালশীর বাইতুর রহমান জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। এই শহীদ সেনা কর্মকর্তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন স্বজন ও স্থানীয়রা। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

গত ২৭ জুলাই ঢাকার নবাবগঞ্জে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেল-২০৬ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ইসমাইল। এই হেলিকপ্টারের পাইলট ছিলেন তিনি। দুর্ঘটনায় তিনি মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পান। হেলিকপ্টারে তার সহযোগী ছিলেন মেজর শামস। ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়।

৫ আগস্ট লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইসমাইলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে পরদিন মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার মেরুদণ্ডে সফল অস্ত্রোপচারও হয়। কিন্তু শরীরে বিভিন্ন জটিলতার কারণে অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

মৃত্যুকালে ইসমাইল হোসেনের বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। তিনি বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ভদ্র, বিনয়ী, ধর্মানুরাগী এবং অত্যন্ত দক্ষ একজন পাইলট ছিলেন বলে জানিয়েছেন সহকর্মীরা। সেনাবাহিনীর কোর অব সিগন্যালস্-এর এই কর্মকর্তা চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি র‌্যাবের এয়ার উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/ইএস)