২০২৪ শেষ হওয়ার আগে অর্থনৈতিক দুর্যোগ কাটবে না: দেবপ্রিয়

প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২২, ২২:১১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশে চলমান অর্থনৈতিক দুর্যোগ ২০২৪ সাল শেষ হওয়ার আগে কাটবে না বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশে দরিদ্র সরকার গত ১০ বছরে নিজের আর্থিক সংস্থান নিশ্চিত করেনি, যার অনিবার্য পরিণতি ভোগ করছে দেশ। যে কারণেই অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলা হোক না কেন, ২০২৪ শেষ হওয়ার আগে এই দুর্যোগ কাটবে না। বৈশ্বিক পরিস্থিতি বর্তমান রোগের একটি উপসর্গ মাত্র। আসল রোগ হলো বাংলাদেশের আর্থিক খাতের যথাযথ সংস্কার হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় একটি উত্তরণকালীন নীতি-সমঝোতা শীর্ষক’ আলাপচারিতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ভট্টাচার্য বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে আগামীতে রাজনৈতিক টানাপড়েন যাই-ই থাকুক না কেন অর্থনীতি তা থেকে মুক্ত থাকবে। অংশগ্রহণমূলক নীতি সমঝোতার জন্য বিরোধী দলের সঙ্গে, সরকারের রাজনৈতিক সহযোগী, সুশীল সমাজ, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞসহ নানা পর্যায়ে আলোচনা করে দুই থেকে তিন বছরের একটি স্বল্প মেয়াদি কৌশল প্রণয়ন করা জরুরি।

সরকারের এই মুহূর্তে তিনটি বিষয় করণীয় আছে উল্লেখ করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, সরকারকে প্রথমত, সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা। দ্বিতীয়ত বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে উৎসাহ দেওয়া এবং তৃতীয়ত, অসুবিধাগ্রস্ত মানুষকে সমর্থন দিয়ে যেতে হবে।

ভট্টাচার্য বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী ৬টি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছিলেন। অর্থবছরের শুরুর দুই মাসের মধ্যে এর চারটি আরও তীব্র হয়েছে। বাজেটের পর অর্থনীতি নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। অনেকে বলছেন বৈশ্বিক কারণে এই পরিস্থিতি। আমি তাদের সঙ্গে আংশিক একমত হয়ে বলছি, শুধু বৈশ্বিক কারণে বললে এক ধরনের ভ্রান্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। অর্থনীতির মূল ফুসফুস হলো আর্থিক খাত। বর্তমানে যে আর্থিক কাঠামো এবং সরকারের খরচ করার যে সক্ষমতা তা উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে সমর্থন দেওয়ার মতো নয়। সরকার এখন আর্থিক সম্পদ খুঁজে বেড়াচ্ছে। ভর্তুকি কমিয়ে দিচ্ছে। অথচ সরকারের আর্থিক সামর্থ্য থাকলে জ্বালানি তেলের এতো উচ্চ হারে দর বাড়িয়ে মানুষকে কষ্টে ফেলতে হত না। ভর্তুকি কাঠামো পুনর্বিবেচনা করা দরকার। সার, বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাসে ভর্তুকি দরকার। কিন্তু ক্যাপাসিটি চার্জের নামে যে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে সেটা খারাপ ভর্তুকি। জ্বালানি তেলের ভর্তুকি কমিয়ে বড় অংকের ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া ভুল পদক্ষেপ।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে শুধু তা দিয়ে পুরো পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে মোকাবিলা করা যাবে না। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার। বৈশ্বিক পরিস্থিতি সব দেশকে আঘাত করেছে। কিন্তু অনেকেই এই পরিস্থিতি যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারছে। আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এখন যদি আমাদের কর জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশ থাকত তাহলে বর্তমানের এতো চাপ তৈরি হতো না।

(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/ইএস/কেএম)