৩৬ বছর খোঁজ নেননি স্বজনদের, অতপর...

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার
 | প্রকাশিত : ১২ আগস্ট ২০২২, ১৬:৩৩

প্রবাসে গিয়ে ভুলে ছিলেন পরিবারের লোকজনকে। ৩৬ বছর খোঁজ নেননি তাদের। এখন অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরেছেন বাহরাইন প্রবাসী অসিত লাল দে। এখন তাকে গ্রহণ করতে নারাজ স্বজনরা। অবশ্য রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় তার ঠাঁই হয় বাড়িতে।

জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার আলীপুর গ্রামের উপেন্দ্র লাল দের ছেলে অসিতকে দেশে ফেরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস সহযোগিতা করে।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, অসিত লাল দে দীর্ঘ ৩৬ বছর আগে নিজের ভাগ্য ফেরাতে ও পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে বাহরাইন যান। এর পর থেকেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে তিনি দেশেও আসেননি। তাই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন এই প্রবাসী ।

বাহরাইন থেকে দূতাবাসের বরাত দিয়ে প্রবাসী সম্রাট নজরুল ইসলাম সিদ্দিকী ঢাকা টাইমসকে বলেন, গত ২৪ মার্চ হঠাৎ স্ট্রোক করে সালমানিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন অসিত লাল। ভর্তির পর তার কোনো মালিক বা স্পনসর এবং কোনো আত্মীয়-স্বজন না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

দূতাবাসের সার্বিক সহযোগিতায় দীর্ঘ পাঁচ মাস চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। দূতাবাস তাকে দেশে পাঠাতে তার ভাই ও আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে কেউই তাকে গ্রহণ করতে রাজি হননি। তাদের ক্ষোভ, ৩৬ বছর যে মানুষটি তাদের প্রয়োজন মনে করেনি, এখন কেন আমাদের প্রয়োজন?

পরে রাষ্ট্রদূত ড. নজরুল ইসলামের নির্দেশনায় দূতাবাসের প্রচেষ্টায় রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহযোগিতায় স্বজনরা অসিতকে গ্রহণ করতে রাজি হন।

অবশেষে দূতাবাস গত ৯ আগস্ট ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও বাহরাইনস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির সহাযোগিতা নিয়ে অসিত লাল দেকে একজন প্রতিনিধিসহ দেশে পাঠায়। ১০ আগস্ট রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা পাল উপস্থিত থেকে তাকে পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দেন।

রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা পাল বলেন, অসিত লাল দে ব্রেন স্ট্রোকের পর দূতাবাসের সহযোগিতায় দেশে আসেন। তিনি একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় দেশে ফিরেছেন। তার দেহের একাংশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে। ব্যক্তি জীবনে তিনি অবিবাহিত।

তিনি বলেন, গ্রামের বাড়িতে তার একমাত্র ভাই উমা দে রয়েছেন। তিনি হযরত শাহজালাল এয়ারপোর্টে গিয়ে তাকে এগিয়ে নিয়ে আসেন। তাছাড়া পরিবারের অবস্থাও খুব খারাপ। এ অবস্থায় তার চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। আপাতত দূতাবাস থেকে ৬১ হাজার টাকা সঙ্গে দেওয়া হয়েছে। আরো এক লাখ টাকা দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, ওই প্রবাসীর চিকিৎসার্থে আমরা সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করবো। আগামী মিটিংয়ে এই প্রস্তাব তোলার পর জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে। তবে তার গ্রামের বাড়ি দুর্গম এলাকায়। সেখান থেকে এসে থেরাপি দেওয়ানো কঠিন। অবশ্য আমরা তার বাড়িতে গিয়েছি। তার চিকিৎসার বিষয়েও খোঁজ খবর রাখবো।

(ঢাকাটাইমস/১২আগস্ট/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :