‘আশীর্বাদ’-এ কেন উপেক্ষীত রোশান-মাহি? বেরিয়ে এলো আসল ঘটনা
মুক্তির অপেক্ষায় সরকারি অনুদানে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘আশীর্বাদ’। এটির পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস। গল্প এবং চিত্রনাট্যও তার। সিনেমার মুক্তিকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মগবাজারের একটি রেস্টুরেন্টে ‘মিট দ্য প্রেস’-এর আয়োজন করেছিলেন নির্মাতা কর্তৃপক্ষ। তবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না ‘আশীর্বাদ’-এর নায়ক-নায়িকা জিয়াউল রোশান ও মাহিয়া মাহি।
এ নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস। শোনা যায়, রোশান আর মাহিকে নাকি ওই অনুষ্ঠানে দাওয়াতই করা হয়নি! এ ঘটনা জেনে অবাক হন অনেকেই। অবশেষে বেরিয়ে এলো আসল ঘটনা। মুখ খুলেছেন চিত্রনায়ক রোশান। তাতেই জানা গেল, কেন দাওয়াত দেওয়া হয়নি তাকে এবং মাহিকে।
রোশান জানান, সিনেমার পোস্টার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার না করায় তাকে এবং মাহিকে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে দাওয়াত করা হয়নি। অভিনেতা বলেন, ‘একটা পোস্টার বানাতে হলে ফটোশুট করতে হয়। তাও যদি না হয় অন্তত পোস্টারটি বানানোর আগে অভিনয়শিল্পীদের মতামত নেওয়া দরকার। লো কোয়ালিটির একটা পোস্টার বানিয়ে যদি আমাকে শেয়ার দিতে বলা হয় তাহলে তা মোটেও কাম্য নয়।’
রোশানের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, সিনেমার পোস্টারটি পছন্দ না হওয়ায় এবং মাহি ও তার মতামত না নেওয়ায় তারা সেটি শেয়ার করেননি। রোশান বলেন, ‘সিনেমা মার্কেটিংয়ের একটা পলিসি থাকে। সম্মিলিতভাবে আলোচনা করতে হয়। তারা ফেসবুক বা হোয়াটসাপে গ্রুপ খুলতে পারতেন। আমি কিছুই জানি না। ‘সাইকো’র প্রচারে গিয়ে জানতে পারি ১৯ আগস্ট নাকি এই সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। এমন বিশৃঙ্খলভাবে একটা সিনেমার প্রচার হয় কিভাবে?’
প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌসকে অপেশাদার উল্লেখ করে রোশান বলেন, ‘প্রযোজকের মধ্যে পেশাদারিত্বের কোনো ব্যাপারই নেই। তিনি এই সিনেমার শুটিং থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত অপেশাদার আচরণ করে গেছেন। শিল্পীদের সঙ্গে যথার্থ ব্যবহার করেননি। এমনকি শুটিং ইউনিটে শিল্পীদের খাবার নিয়েও কষ্ট দিয়েছেন।’
অভিনেতার অভিযোগ, ‘এটা (আশীর্বাদ) ৬০ লাখ টাকার অনুদানের সিনেমা। আমি জানি না আসলে সম্পূর্ণ টাকা দিয়ে সিনেমাটি বানানো হয়েছে কি না। না হলে এতো কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ করে কেন সিনেমা বানানো হলো। শুটিং ইউনিটে কখনো খাবারের সমস্যা হওয়ার কথা না। অথচ প্রযোজক খাবারের সমস্যা করলেন। খাবার পানি পর্যন্ত নিজের ঘরে তালাবন্ধ করে রাখতেন। টাকা বাঁচাতে উনি নিজেই বাজার করতে যেতেন।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রযোজক জেনিফার বলেন, ‘আশীর্বাদ সিনেমায় তারা (রোশান ও মাহি) অভিনয় করেছেন, অথচ সিনেমার পোস্টার ফেসবুকে শেয়ার দেননি। কেন শেয়ার দেননি বুঝতে পারছি না! যেহেতু শেয়ার করেননি, মনে হয়েছে আমাদের সিনেমার পার্ট হিসেবে তারা খুশি নন। সে জন্য আমি এবং আমার পরিচালক তাদের এ সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারে জানাইনি।’
প্রযোজক জেনিফার আরও বলেন, ‘নায়ক-নায়িকা যখন নিজেদের সিনেমার প্রচার করে না, তখন আমরা তো আর জোর করে করাতে পারি না। নিজের সিনেমার ভালো না বুঝলে আমাদের কিছু করার নেই। সিনেমার প্রচার না করলে একসময় তারা মাইনাস হয়ে যাবে। আমার আর কিছু বলার নেই। আশা করছি, নির্মাণ এবং গল্পের জন্য আমার সিনেমাটি ভালো চলবে।’
প্রসঙ্গত, ‘আশীর্বাদ’ মডেল ও উপস্থাপিকা জেনিফার ফেরদৌস প্রযোজিত প্রথম সিনেমা। এর জন্য ২০১৯-২০ অর্থ বছরে তিনি ৬০ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পেয়েছেন। জিয়াউল রোশান ও মাহিয়া মাহি ছাড়াও এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন কাজী হায়াৎ, রেহানা জোলি, রেবেকা, শাহনূর, অরণ্য বিজয়, হারুন রশিদ, সায়েম আহমেদ, সীমান্ত, শিশুশিল্পী জেনিলিয়া, আরিয়ানসহ অনেকে।
(ঢাকা টাইমস/১২ আগস্ট/এলএম/এএইচ)