বিয়ের আসরে যৌতুক চেয়ে পিটুনি খেলো বর, অতঃপর..

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২২, ১৫:৩৭

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

বিয়ের এক মাসের মাথায় কনের বাড়িতে আয়োজন করা হয় বরযাত্রী খাওয়ানোর অনুষ্ঠান। খাওয়ার অনুষ্ঠানিকতা শেষে দেনা-পাওনা নিয়ে বর-কনে পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাধে হট্টগোল। একপর্যায় তা রূপ নেয় বর-কনের বিবাহ বিচ্ছেদে। পরে বরের কাছে থাকা একটি আংটি ফেরত চাওয়া নিয়ে ফের শুরু হয় উত্তেজনা। সংঘর্ষ বেধে যায় বর-কনে দুই পরিবারের মধ্যে । এতে বরসহ আহত হন অন্তত ৫ জন। পরে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

শুক্রবার বিকাল ৫টায় ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের হিয়াবলদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগরকান্দা থানার ওসি হাবিল হোসেন।

স্থানীয়রা জানান, গত ১২ জুলাই হিয়াবলদি গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শামিল শেখের কলেজ পড়ুয়া মেয়ের স্বর্ণা আক্তারের (১৯) সঙ্গে পাশের লস্করদিয়া ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে এনজিও কর্মী শাহজাহান শেখের (৩৪) পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের এক মাসের মাথায় দুই পরিবারের সম্মতিতে কনের বাড়িতে শুক্রবার (১২ আগস্ট) বরযাত্রী খাওয়ানোর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানের দিন দুপুরের পর বরযাত্রী আসলে তাদের খাওয়া-দাওয়া করান কনে পক্ষ। আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর পক্ষের চাহিদা অনুযায়ী কনে পক্ষ বরকে দেনা-পাওনা মেটাতে ব্যর্থ হলে বাধে হট্টোগোল। বিষয়টি দুই পক্ষই বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে দুইপক্ষের সমঝোতায় অনুষ্ঠানস্থলেই বর-কনের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে কনের পক্ষ থেকে বরকে দেওয়া একটি স্বর্ণের আংটি ফেরত চাওয়া হলে বর পক্ষ স্বর্ণের পরিবর্তে রৌপ্যের একটি আংটি ফেরত দেয়। ঘটনাটি নিয়ে তখন সংঘর্ষ বাধলে বরকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন কনে পক্ষের লোকজন। এতে দুই পক্ষের প্রায় ৫ জন আহত হয়। আহতদের নগরকান্দা স্বাস্থ্য কমল্পেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

কনের মা শেলিনা বেগম বলেন, বিয়ের পর যৌতুক হিসেবে ছেলে পক্ষ আমাদের কাছে চার লক্ষ টাকা দাবি করে। আমরা টাকা দিতে দেরি করলে তারা আমাদের বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে। পাশাপশি আমার মেয়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। আমি তাদের বুঝিয়ে সময় চাই। পরে দুই পরিবারের পরামর্শ অনুযায়ী শুক্রবার অনুষ্ঠানের দিন ঠিক করা হয়। অনুষ্ঠানে তাদের প্রায় ৫০ জন লোক বরযাত্রীতে আসে। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে তারা মেয়ে না নিতে অস্বীকৃতি জানায় ও তাদের পাওনার জন্য চাপ দেয়। আমরা একটু সময় চাইতেই তারা খারাপ আচরণ শুরু করলে বাধে বাকবিতন্ডা।
 
বর শাহজাহান শেখ বলেন, তারা বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আমার সব জিনিসপত্র রেখে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা আমাকেসহ আমার সঙ্গের লোকদের পিটিয়ে আহত করেছে।

ফুলসুতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন বলেন, বিয়ে বাড়িতে এমন ঘটনা লজ্জাজনক।

নগরকান্দা থানার অফিসার ইনাচার্জ (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বলেন, এক মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। শুক্রবার তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা চলছিলো। খাওয়া দাওয়া শেষে দুই পক্ষের লোকজনের বাকবিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে দুই পক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
 
(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এসএম)