বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা আবারও মাঠে নেমেছে: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২২, ১৯:২৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা আবারও মাঠে নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন,  তাদের তাড়িয়ে দিতে হবে এবং প্রতিরোধ করতে হবে।

 

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির সমাবেশে আমরা কখনো বাধা দিইনি, দেবও না। কিন্তু নিজেরা যখন মারামারি করে তখন তো অন্য কারো বাধা দিতে হয় না। যদি পেট্রোলবামা বাহিনীদের দেখি তখন কিন্তু আমরা বসে থাকব না, প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
 

তিনি বলেন, বর্ষাকালে যখন বৃষ্টি হয় পুকুরে পুঁটি মাছ খুব লাফায়, পুঁটি মাছের সঙ্গে মলা মাছও খুব লাফায়। এখন বিএনপির লাফালাফি হচ্ছে পুঁটি আর মলা মাছের লাফানির মতো। তেলের দাম বাড়াতে ওরা একটু লাফাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর সমগ্র পৃথিবীতে তেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ৬০ ডলারের তেল ১৭০ ডলারে গিয়েছে। এখন সেটি ১৩৮/৪০ ডলার। দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। আমাদের দেশে আমরা তেলের দাম দ্বিগুণ করি নাই। সবমিলিয়ে ৩৮/৪০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আমরা বাড়িয়ে পশ্চিমবাংলার সমান করেছি। বিশ্ববাজারে যদি তেলের দাম স্থিতিশীলভাবে কমে তাহলে আবার তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। তাই বিএনপির এই পুঁটি ও মলা মাছের মতো এত লাফালাফির কোনো প্রয়োজন নেই।
 

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদার।  
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এ দেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। আর সেই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ফজরের আলো ফোটার আগে যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সংবাদ জিয়াউর রহমানের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, তখন সেই ভোরবেলা স্যুটেট-বুটেট অবস্থায় থাকা জিয়ার স্বাভাবিক জবাব ছিল, কী হয়েছে তাতে, উপরাষ্ট্রপতি তো আছে ! তখন তিনি পোশাক পরে তৈরি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের খবরের অপেক্ষায়।
 

তিনি বলেন, কর্নেল ফারুখ ও রশিদ ১৯৭৬ সালে লন্ডনে একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা বিভিন্ন সময়ে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতা দখল করে তখন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে তার সংশ্লিষ্টতা, সেই যে অন্যতম কুশীলব ছিল তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সব প্রমাণ করেছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন, তাদের বিদেশে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
 

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সেবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হচ্ছেন জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবার উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রসিডিং সংরক্ষিত আছে, সেই মামলার প্রসিডিংয়ে আসামি এবং সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দিতে সবিস্তারে বলেছেন কখন কোথায় কিভাবে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছিল।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মেজর জেনারেল সফি উল্লাহকে সরিয়ে দিয়ে জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনী প্রধান করেন খোন্দকার মোস্তাক। মোস্তাকের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর না হলে জিয়াউর রহমানকে কেন সেনাবাহিনী প্রধান করা হয়?

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বন্দুকের নল থেকে নির্গত দল হচ্ছে জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি। তিনি বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন। সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য মির্জা ফখরুল, খন্দকার মোশাররফ, গয়েশ্বর বাবুসহ যারা যোগদান করেছিলেন তারাই হচ্ছে বিএনপির বড় বড় নেতা। তারা সবাই রাজনীতির কাক।
 

তিনি বলেন, কয়দিন আগে বিএনপির নেতৃত্বে সমাবেশ হয়েছিল নয়াপল্টনে। সেখানে এই রাজনীতির কাকেরা যেভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সম্পর্কে কথা বললেন, সেই ধরনের কথা আমাদের রুচিতে বাঁধে। কিন্তু আমি যদি বলি তাদের নেতানেত্রীরা লজ্জায় মুখ দেখাতে পারবেন না।
 

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, আবুল কাশেম চিশতি, জহির আহমদ চৌধুরী, মো. শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ইদ্রিচ আজগর, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, আকতার হোসেন খান, জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার, আবু তাহের, এমরুল করিম রাশেদ, শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ। 

(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এআর)