জমি নিয়ে বিরোধ: পদ্মা সেতু নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে হাজতে যুবক!

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২২, ২৩:০০

নোয়াখালী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফেসবুকে পদ্মা সেতু ও সরকারবিরোধী পোস্টের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত নোয়াখালীর হাতিয়ায় তাজুল ইসলাম তপনকে প্রতিহিংসার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী। জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তপনের সঙ্গে তার বড় ভাই বেলাল উদ্দিন কামালের যে বিরোধ চলছে- এর জেরে চক্রান্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন তপনের স্ত্রী সোনিয়া পিংকি।

তপনের পরিবারের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কামালের ছেলে কামরুল হাসানের পরিকল্পনা অনুযায়ী  গত মঙ্গলবার দুপুরে তপনকে লোকজন দিয়ে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করে কামালের ছেলে কামরুল।

তপনের স্ত্রী সোনিয়া পিংকি ঢাকা টাইমসকে জানান, ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন তপন। ছুটিতে বাড়িতে এসে পুনরায় চাকরিতে যোগদানের উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার তপনসহ তিনি ঢাকা যাচ্ছিলেন। বেলা ১২টার দিকে হাতিয়ার তমরদ্দি ঘাটে পৌঁছামাত্র ৭-৮ জনের একদল যুবক তাদের আটক করে ঘাটের কাছে একটি দোকানে ঘণ্টাখানেক আটকে রাখে। পরে ১টার দিকে নিয়ে যায় তমরিদ্দ পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখানে ঘণ্টাখানেক তাদের মোবাইল চেক করার পর তেমন কিছু পাননি বলে জানান ফাঁড়িতে দায়িত্বরত ইনচার্জ। পরে কামরুলের লোকজন সেখান থেকে আমাদের হাতিয়া থানায় নিয়ে যায় এবং তপন সরকারবিরোধী বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছে- এমন তথ্য দিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে তারা।

তিনি বলেন, তপনের সঙ্গে আমাকে হাতিয়া থানায় বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রাখা হয়। সেই দুপুর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টানা-হেঁচড়া ও জিজ্ঞাসাবাদে অসুস্থ হয়ে পড়েন তপনের গর্ভবতী স্ত্রী সোনিয়া পিংকি। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।        

সোনিয়া পিংকি আরও বলেন, ‘৬ ভাইয়ের মধ্যে তপন সবার ছোট। তপনের সঙ্গে ৮ শতাংশ জমি নিয়ে তার বড় ভাই বেলাল উদ্দিন কামালের সঙ্গে বিরোধ ছিল। জমিটুকু তপনের হলেও তা নিজেদের বলে দাবি করে আগেও কয়েকবার তপনের সঙ্গে ঝামেলা করে কামালের ছেলে কামরুল হাসান। ওই বিরোধের জেরেই কামরুল পরিকল্পনা করে তপনকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে পরদিনই ওই জমিতে ধান চাষ করে ফেলেছে।’ ব্যক্তিগত শত্রুতাকে পুঁজি করে তার স্বামী তপনকে ফাঁসানো হয়েছে বলে তিনি তার মুক্তি দাবি করেন।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন ঢাকাটাইমকে বলেন,  ‘স্থানীয় লোকজন তপনকে থানায় সোপর্দ করার পর তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। তার ব্যবহৃত মোবাইলটি পরীক্ষার জন্য ঢাকায় সিআইডির ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। আটকের পরদিন বুধবার ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে হাতিয়া কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’আগামী মঙ্গলবার তাকে আদালতে ওঠানো হবে বলে জানান তিনি।

তপন পারিবারিকের বিরোধের শিকার কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, পারিবারিক বিরোধ থাকতে পারে, এসব আমাদের দেখার বিষয় না।   

উল্লেখ্য, এর আগে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেছিলেন, ‘আটক তপন ঢাকায় একটি ব্যাংকে চাকরি করার সুবাদে ঢাকায় থাকেন। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পদ্মা সেতু নিয়ে তার ফেসবুকে কটূক্তিমূলক একাধিক পোস্ট করেন। আমরা তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করার পর অনেকগুলো সরকারবিরোধী পোস্ট পেয়েছি। তার এই পোস্টগুলো হাতিয়ার  লোকজনের নজরে আসে।’

(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এআর)