বুয়েটে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সভা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২২, ২৩:৪০ | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২২, ২৩:৪২

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার পর রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়—বুয়েটে সভা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক একদল নেতা।

আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।

খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।  অন্তত ৫০০ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতিবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেন।

তবে সভার আয়োজক সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা দাবি করেন, এটি কোনো রাজনৈতিক সভা নয় বরং বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দোয়া অনুষ্ঠান করবে, তবে সেটা সাবেক ছাত্রলীগ হয়ে কেন? সাবেক শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই আয়োজন করা যেত।

২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শেরে বাংলা হলে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আদালত এ হত্যার দায়ে  ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাইফুল ইসলাম নিজের ক্ষমতাবলে ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি এবং রাজনৈতিক সংগঠন ও তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়।

শনিবার বিকাল ৫টা থেকে শুরু হয়ে ছাত্রলীগের সভা চলে রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত চলে। এর আগে সন্ধ্যা ৭টা থেকে বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে একত্রিত হতে থাকেন। এরপর সভা শেষে বুয়েটের সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা বের হলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘আবরারের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না’, ‘রাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ - স্লোগান দিতে থাকে। 

ছাত্রলীগের সভা শেষে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাল মাহমুদ বিক্ষু্ব্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার জন্য দোয়ার অনুষ্ঠান। 

সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে প্রেস ব্রিফিং করেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও আজ ১৩ আগস্ট সেমিনার হল বুয়েট অডিটোরিয়াম কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বুয়েটের সাবেক নেতৃবৃন্দদের আয়োজনে একটি ব্যানার দেখা যায়।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, গত ২ জুলাইয়ে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলে আরিফ রায়হান দিপের স্মৃতিফলকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ৮ জুনে সাবেকুন নাহার সনির স্মৃতিফলকে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে ব্যানার টানানো হয়। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের বারবার নিজেদের উপস্থিতি জানিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করার অনুমতি পাচ্ছে। এতে বুয়েট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এমন কার্যক্রমের ব্যাপারে আমরা বুয়েটের সব সাধারণ শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের অবস্থান এবং সুস্পষ্ট জবাব আশা করছি।

(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এসকে/কেএম)