বাউফলের হাসপাতালটি কোন কাজে আসছে না গ্রামবাসীর

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২২, ১২:০৪

কৃষ্ণ কর্মকার, বাউফল (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর বাউফল উপজলা সদরের কায়না গ্রামে ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ চিকিৎসা কেন্দ্রটি গ্রামবাসীর কোন কাজে আসছে না। চিকিৎসা কেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর দীর্ঘ বছরেও একজন রোগীও ভর্তি হয়নি। প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে হাসপাতালটি এখন নামেই রয়েছে।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে সেপ্টেম্বরে বাউফলের কায়না গ্রামে সাবেক সাংসদ রুহুল আমিনের বাড়ির সামনে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ২০১৬ সালে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রক্যেশল অধিদপ্তর (এইচইডি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। দুটি তিন তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যায় হয় ৩ কোটি ৯২ লাখ ৮২ হাজার টাকা। তিনতলা ভবনের একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসার জন্য অন্যটি চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থাকার জন্য আবাসিক ভবন হিসেবে।

সরকারি বিধি অনুযায়ী একজন মেডিকেল অফিসার, একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ক্লিনিক ( ল্যাব), পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক চারজন, একজন করে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, অফিস সহায়ক, ওয়ার্ডবয় ও আয়া। অথচ কেন্দ্রটিতে নেই কোন চিকিৎসক। একজন তৃতীয় শ্রেণির নার্স, একজন নিরাপত্তা কর্মী ও একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়েই চলছে হাসপাতালটি।

হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্টারে দেখা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত ৩১ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।  যার মধ্যে অধিকাংশ সর্দি ও জ্বর রোগে আক্রান্ত।

সদর বাউফল ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে তার পাঁচ মাসের অন্তসত্ত্বা স্ত্রী নুপুর বেগম (২৩) অসুস্থ হয়ে পড়লে কায়না গ্রামের মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন কোন চিকিৎসক নেই। পরে একজন নার্স ও একজন স্বাস্থ্যকর্মী প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে স্ত্রী সুস্থ হন।

আবুল হোসেনের অভিযোগ, সরকার কোটি টাকা ব্যায়ে যে হাসপাতাল করলেন তা যদি কাজে না আসে- তাহলে করে লাভ কি হলো। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতালটি চালু করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা পরিবার পরকিল্পনা কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, এ উপজেলার ১০ শয্যার দুটি মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে, লোকবল না থাকায় সরকারের গ্রামীণ পর্যায়ে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চিত করার যে উদ্দেশ্য তা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ বিষয়ে উপরস্থ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

পটুয়াখালী পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তর লোকবল নিয়োগ না দেওয়ায় এ ধরনের মা ও শিশু কল্যাণ চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো কোন কাজে আসছে না। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় অবহিত আছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/এলএ/এসএ)