‘এসে দেখি বোনের মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে’

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৪:০১ | আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৬:০২

নাটোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নাটোরের কলেজ শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের (৪০) মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে প্রশ্ন উঠেছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে ইতোমধ্যে তার স্বামী মামুনকে (২২) আটক করে সদর থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

এদিকে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা খাইরুন নাহার আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের অনেকে দাবি করছেন- এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

খাইরুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবের হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আজ সকালে আমার কাছে একটা ফোন কল আসে। ফোনে জানানো হয়, আমার বোন নাকি আত্মহত্যা করেছেন। এ খবর শুনে দ্রুত ছুটে আসি। এসে দেখি, আমার বোনের মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘মরদেহের গলায় বেশ কিছু দাগ দেখতে পেয়েছি। এতে মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’ 

অপরদিকে বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে এক ব্রিফিংয়ে এসপি লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলাম। তারা স্বামী-স্ত্রী তাদের বিয়েকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছিল। পরবর্তীতে সামাজিক, পারিবারিক এবং কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় তাদের মধ্যে একটা মানুষিক চাপ সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে।’

‘তার (কলেজশিক্ষিকা) সন্তানদের পক্ষ থেকেও একটা মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। এসব চাপের কারণেই এটা আত্মহত্যা কি না, অথবা অন্য কোনো কারণ আছে কি না আমরা তদন্ত করে দেখছি’—যোগ করেন এসপি।

উল্লেখ্য, রবিবার সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গুরুদাসপুরের খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খাইরুন নাহারের প্রথমে বিয়ে হয়েছিল রাজশাহীর বাঘায়। সেখানে তার এক সন্তানও রয়েছে। পারিবারিক কলহের কারণে সে সংসার বেশিদিন টেকেনি। তারপর কেটে যায় অনেক দিন। এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ২২ বছরের যুবক মামুনের সঙ্গে। ছয় মাস প্রেমের পর বিয়ে করেন তারা।

মামুনের বাড়ি একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। তিনি নাটোর এনএস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন খাইরুন। একবার আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন।

এই বিয়ে মামুনের পরিবার মেনে নিলেও শিক্ষিকার পরিবার মেনে নেয়নি। সামাজিকভাবে বিভিন্ন মহলে নানা কুৎসিত মন্তব্য করলেও সেসব তোয়াক্কা না করে নতুন সংসারে সুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু মাত্র ছয় মাসের ‘সুখের সংসারের’ পর আজ লাশ উদ্ধার হলো শিক্ষিকার।

(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/এফএ/এসএম)