হোটেল জোনে ভয়ঙ্কর টর্চার সেল: দুজন গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২২, ২১:৪৮

কক্সবাজার প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল জোনে টর্চার সেলের জিম্মি অবস্থা থেকে পর্যটকসহ চারজনকে উদ্ধারের ঘটনার মামলায় ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, রবিবার মধ্যরাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পশ্চিম খানা ঘোনা এলাকার নুরুল আজিমের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২৫) এবং একই ইউনিয়নের পূর্ব বামনকাটা এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে মো. সাকিল (২২)।

সোমবার (৮ আগস্ট) ভোরে কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ এলাকা সংলগ্ন আবাসিক কটেজ জোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি টর্চার সেলের সন্ধান পায় পুলিশ। এসময় কটেজ ব্যবসার আড়ালে ‘টর্চার সেলে’ জিন্মি রাখা অবস্থায় দুই পর্যটক ও দুই কিশোরকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সাইনবোর্ড বিহীন শিউলি রিসোর্ট নামের ওই আবাসিক কটেজে তল্লাশী চালিয়ে নির্যাতন চালানো ও আপত্তিকর কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছুসংখ্যক উপকরণ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার ( ৯ আগস্ট ) সকালে ভূক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাবা মো. বেলাল আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১১ জনকে আসামি করে কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১১ আসামির মধ্যে আট জন পুরুষ ও তিন জন নারী রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, শিউলি রিসোর্ট নামের আবাসিক কটেজের কথিত টর্চার সেলে পর্যটকদের জিম্মি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় দায়ের মামলাটি তদন্ত করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হামিদ। ঘটনার তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার ব্যাপারে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পর্যটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, কথিত টর্চার সেলে পর্যটকদের জিম্মি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় সংঘবদ্ধ চক্রের ৮ থেকে ১০ জন দূর্বৃত্ত জড়িত রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে সহজ-সরল পর্যটক ও সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে শিউলি রিসোর্ট নামের কটেজে এনে নারী ও মাদক দিয়ে বø্যাকমেইল করে আসছিল। পরে জিম্মিদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে দেখাতো। এতে ভুক্তভোগীরা মান-ইজ্জতের কথা ভেবে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে কোনো অভিযোগ দিতো না। 

এদিকে, হোটেল-মোটেল জোনের আবাসিক কটেজগুলোতে বিভিন্ন ধরণের অপরাধ সংঘটনের সাথে সংঘবদ্ধ একটি চক্র জড়িত রয়েছে। এ চক্রের বেশ কিছু দালালও রয়েছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় চিহ্নিত কয়েকটি কটেজে এসব অপরাধ সংঘটন করে আসছিল বলেন রেজাউল করিম। পর্যটন পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, মামলার তদন্তে ঘটনায় জড়িত যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/এআর)