‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সঙ্গে সহাবস্থান প্রত্যাশিত নয়’

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০২২, ২২:১৯

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সঙ্গে সহাবস্থান প্রত্যাশিত নয় বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হলে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ-চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির সঙ্গে সহাবস্থান এবং রাজনৈতিক সমঝোতা বা একই রকম অভিপ্রায় অসম্ভব।’

রবিবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘অশ্রুঝরা আগস্টে শোকসঞ্জাত শক্তির অন্বেষা’শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন উপাচার্য। 

উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আজও যারা ইতিহাস বিকৃতি, সমাজ বিকৃতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলার দুঃসাহস দেখায়। আজও যারা ছলচাতুরি করে বলার চেষ্টা করে বাকশাল কায়েম করেছিল বলেই এমন ঘটেছে। এসব ভুল ব্যাখ্যা। বাকশাল হচ্ছে শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, সারাবিশ্বে নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা চালুর নব উদ্যোগ। বঙ্গবন্ধু জেনে, বুঝে, আত্মস্থ করে বলেছিলেন- বিশ্ব আজ দু’ভাগে বিভক্ত। শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে। সুতরাং বঙ্গবন্ধুকে বোঝার জন্য আরও গভীরে যেতে হবে। নতুন বিশ্বব্যবস্থায় বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব একটি নতুন রাজনৈতিক দর্শন হতে পারতো। সেটি সফল হলে পৃথিবীব্যাপী এই দর্শন অনুসরণ করা হতো। আমি আশা করবো, বঙ্গবন্ধু চর্চার মধ্য দিয়ে আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধ চেতনা আরও শাণিত হবে। জাতির পিতার আত্মা শান্তি পাবে।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা শোককে শক্তিতে রূপান্তরের কথা বলি। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যার পরে দু’সপ্তাহ,  তিন সপ্তাহ, পাঁচ সপ্তাহ বা এক বছর নয়, দেশটিকে ২১ বছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। ২১টি বছর আমরা অগণতান্ত্রিক সামরিক শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছি। তার প্রতিবাদ কতোটা দৃঢ়ভাবে করতে পেরেছি বা করেছি। আমরা একটি বিষয় বুয়েটে প্রত্যক্ষ করলাম। সেখানে স্পষ্ট করে নাম ধরে বলা হচ্ছে ছাত্রলীগ করা যাবে না। বর্তমান সময়ের ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে যদি প্রশ্ন থাকে বা থাকতে পারে। কিন্তু জাতির পিতার হাতে গড়া ছাত্রসংগঠনের সাবেক নেতারা দোয়া করতে, প্রার্থনা করতে, মিলাদ-মাহফিল করতে যেতে পারবে না সেটির পক্ষে অবস্থা নিয়ে স্লোগান দেয়ার মধ্যে আমি ২১ আগস্টের পুনরাবৃত্তি দেখি। সুতরাং আগস্টে শক্তি সঞ্জাত সবার অভিপ্রায় শুধু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তা নয়, আগস্ট বারেবারে পুনরুত্থাপিত হয় তাদের দ্বারা যারা হত্যাকারী। তা নাহলে তারেক জিয়ার পরিকল্পনায় খালেদা জিয়ার সময়কালে একুশে আগস্ট ঘটতো না। আগস্টে এসে আমাদের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এমন করে স্লোগান দিতে পারতো না। এর মানে আমরা যতই বলি না কেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সামাজিকীকরণের পক্ষে কোথাও কোনো রকমের বিচ্যুতি এখনো ঘটছে। যদি ঘটে থাকে সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, পরিবারে, ধর্মক্ষেত্রে, মন্দিরে, মসজিদে- সব জায়গাতে হয়তো বা হচ্ছে। সেখান থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, বিশেষ অতিথি ছিলেন নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, এম নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিভু রঞ্জন সরকার। 

(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/এলএ)