শোক থেকে শক্তি, শোক থেকে জাগরণ

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০২২, ১৫:২৪ | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২২, ১৫:২৮

রেজাউল মাসুদ

১৫ আগস্ট গভীর রাতে প্রেসিডেন্ট গানম্যান রেজিমেন্টের অফিসার, ঘাতক অফিসারদের সাথে ষড়যন্ত্রে মেতে তার সিপাহিদের প্রতিরোধে নিবৃত্ত করে।ভোরে ৩২ নম্বর আক্রান্ত হলে পুলিশই প্রথম গুলি ছুড়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ঘাতক সেনাদের গুলিতে ঘটনাস্থলে শহীদ হন পুলিশের এএসআই ছিদ্দিকুর রহমান। গুলিবিদ্ধ হন পুলিশের ডিএসপি অফিসার নুরুল ইসলাম খান।

সকল পুলিশ সদস্যকে বন্দী করে অস্ত্র কেড়ে নেয় ঘাতকেরা। কোনো পুলিশ সদস্য এ ষড়যন্ত্রে ন্যুনতম সায় দেয়নি কিংবা সে রাতে কোনো পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত হতে হয়নি বঙ্গবন্ধুর বুক। সেরাতে শহীদদের তালিকায় কর্ণেল জামিলের ছবি দেওয়া হলেও পরিকল্পিত ভাবে এএসআই ছিদ্দিকুরকে বাদ দিয়ে পনের আগষ্টের বাংলাদেশ পুলিশের মহান আত্মত্যাগের ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত করা হয় জাতিকে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে জাতির পিতা নিহত হওয়ার পর পুলিশে আবারো পাকিস্তান ‘সিনড্রোম’ ফিরিয়ে আনা হয়। পুলিশকে যতটা না সাধারণ মানুষের কল্যাণে পরিচালিত হওয়ার কথা ছিল বরং তার উল্টোটা করা হয়। গণতন্ত্র ফেরাতে দীর্ঘ সময় ধরে চলে বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন। সরকারের নির্দেশে আবারও পুলিশের অবস্থান সাধারন মানুষের বিপক্ষে, আন্দোলনকারীদের উল্টো দিকে। ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসন, পাকিস্তানি শাসন, স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়া, এরশাদের সামরিক শাসন মিলে আড়াইশো বছর ধরে এই পুলিশ বাহিনী ব্যবহৃত হয়ে আসছে সাধারণ মানুষকে দমিয়ে রাখতে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ রাসেল সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে এক বক্তৃতায় আবেগী হয়ে বলেছিলেন “রাসলেকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করতো, বড় হয়ে তুমি কি হবে? তাহলে বলতো, আমি আর্মি অফিসার হব। ওর খুব ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে, অথচ পনের আগস্ট সেই নির্মম আর্মি অফিসারদের বুলেটেই কেড়ে নিল আমাদের ছোট্ট রাসেলকে। মা, বাবা, দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, চাচা সবার লাশের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার শেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল রাসেলকে।

ওই ছোট্ট বুকটা কি তখন ব্যথায় কষ্টে বেদনায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল?”

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই আবেগী স্মৃতিচারণের পর যে কথাটা বলতে ইচ্ছা করে তা হলো

ইতিহাস বলে, পুলিশ কখনই দেশ মাতৃকা এবং বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাসের সাথে বেইমানি করেনি, করবেওনা কোনদিন।

লেখক: বিশেষ পুলিশ সুপার, সিআইডি।