নারী বাউল শিল্পীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন শিক্ষক

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৩:০৪

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দুই নারী বাউল শিল্পী ও তার সঙ্গীদের পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই শিক্ষক হাফিজুর রহমান তার ছেলে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের কাস্তা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বাউল শিল্পীদের মারধর করা শিক্ষক হাফিজুর রহমান কাস্তা গ্রামের বাসিন্দা ও কাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিলুর রহমান হাবিবের বড় ভাই। 

স্থানীয়রা ও মারধরে শিকার বাউল শিল্পীরা জানান,  নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার কাছিকাটা গ্রামের বাউল শিল্পী কামনা সরকার (২৮) তার স্বামী বাবু সরকার ও অপর আরেক শিল্পী উল্লাপাড়া উপজেলার রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের ঘোনা কালজানি গ্রামের রাঙ্গা হোসেনের মেয়ে বন্যা খাতুনকে নিয়ে তাড়াশের ভোগলমান গ্রামের এক স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে মধ্যে কাস্তা বাজারে এসে নাজমুল নামের তাদেরই একজন যন্ত্র সঙ্গীত বাদ্যকরের সাথে চা পান করছিলেন।

এ সময় সেখানে থাকা শিক্ষক হাফিজুর রহমান শিল্পী কামনা সরকার ও তার সফরসঙ্গীদেও বেশভূষা  নিয়ে কটুক্তি করেন। এতে ওই শিল্পীরা প্রতিবাদ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে গালাগাল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষকের ছেলে হৃদয় হোসেন (২০) ঘটনাস্থলে এসে বাবার সাথে এসে তিনিও  শিল্পীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। কিন্ত বাউল শিল্পী কামনা সরকার  শিক্ষক হাফিজুর রহমান ও তার ছেলেকে সংযত হয়ে কথা বলার অনুরোধ করেন।

সঙ্গে সঙ্গে  শিক্ষক হাফিজুর রহমান বাউল শিল্পী কামনাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পাশাপাশি বাবা ছেলে মিলে দুই শিল্পীকে মারধর করেন। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে  প্রথমে তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি করেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে  দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক রাকিবুল ইসলাম উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে  শিল্পী কামনা সরকারকে স্থানান্তর করেন।

তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মো.রাকিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, আহত এক শিল্পীকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে স্থানান্তর করেছি।

মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিলুর রহমান হাবিব জানান , তার বড় ভাইয়ের সাথে আলাপ করতে গিয়ে  শিল্পীরা গালাগাল করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। তারপর খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে শিল্পী কামনা সরকারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিজ উদ্যোগে সিরাজগঞ্জে পাঠিয়েছি।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর রহমান ও তার ছেলে হৃদয় হোসেনের বক্তব্য নেয়ার জন্য  মোবাইলে না পেয়ে তাদের বাড়িতে গেলেও তাদের পাওয়া যায়নি। 

তাড়াশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। পাশাপাশি এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগও করেননি।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এআর)