‘খুনি ক্রেন’ মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত, পুলিশ কি জব্দ করেছে?

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ১২:৫৮ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৩:৩৭

নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকাটাইমস

রাজধানীর উত্তরায় দিনের বেলা কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) উড়াল সড়ক প্রকল্পের কাজ করছিল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ভার বইতে না পেরে ক্রেন কাত হয়ে গার্ডার পড়ে যায় প্রাইভেট কারের ওপর। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। কিন্তু ওই ‘খুনি ক্রেন’ কি জব্দ করেছে পুলিশ?

ইতিমধ্যে এ ঘটনায় দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া দুর্ঘটনার সময় ক্রেনের চালক, প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।

তবে ওই ‘হত্যাকাণ্ডের’ আলামত হিসেবে ক্রেনটি জব্দ করার বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে খুনি ক্রেনকে জব্দ করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আলামত হিসেবে ক্রেনটাই রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ক্রেনের চালক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে। যেকোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।’

গত সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কে বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন কাত হয়ে গেলে গার্ডারের নিচে প্রাইভেট কার চাপা পড়ে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর রাতে সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তারসহ পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরের দিন মঙ্গলবার ওই কমিটি প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে প্রকল্পের নিরাপত্তায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির বিষয়টি উঠে আসে। এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এক কর্মকর্তা।

এর আগে দুর্ঘটনার দিন রাতেই ক্রেনের চালক, প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্না আক্তারের ভাই আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ওসি মোহাম্মদ মোহসীন বলেন, ‘এ ঘটনায় ক্রেন চালক আল আমিনকে আটক করতে অভিযান চলছে। তাকে ধরতে ইতিমধ্যে তার জুরাইনের বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোকছেদ আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ওই ক্রেনটিকে জব্দ তালিকায় নেওয়া হয়েছে। এটাকে অবশ্যই মামলার আলামত হিসেবে দেখানো হবে। কিন্তু ক্রেনটাকে এভাবে তো ওখান থেকে সরানো যাবে না। কারণ এটা ভারী জিনিস যত্রতত্র সরাতে গেলে আবার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য সুযোগ মতো সরিয়ে নেওয়া হবে।’

ডিসি বলেন, ‘ওই ক্রেনটি দিয়ে অনেক গার্ডার সরিয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তবে ওইদিন কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটল, সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। এটাতে চালকের না ক্রেনের ত্রুটি ছিল- সেটি নিয়ে বিতর্ক চলছে।’

তদন্ত করেই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ডিসি।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এএইচ/এফএ)