সেতু তো নয় যেন মৃত্যুফাঁদ

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৪:০৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর-তাহিরপুর সড়কের ফতেহপুর সেতুটির নীচ থেকে মাটি সরে গিয়ে শত ফুট গভীর হয়েছে। দু’দিকের এপ্রোচের প্রায় সবটুকু ভেঙ্গে সামান্য অংশ সেতুর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। আর অল্প বৃষ্টি হলে বাকিটুকু ধসে সেতুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পরবে।

এই সেতুটি দিয়ে সুনামগঞ্জের চার উপজেলার যোগাযোগের মাধ্যম। সেতুটির উভয় পাশের মাটি সরে ও সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের কারণে চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ।

সেতুটি সুনামগঞ্জে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের সজনার হাওর ও কোপা নদীর সংযোগ স্থলে ফতেহপুর সেতু।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, বন্যা পূর্ববর্তী সময়ে সুনামগঞ্জ সড়ক ও ফতেহপুর ইউনিয়নের জনপথ ভাঙনে বস্তা ফেলে সংস্কারের চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু ফতেহপুর-তাহিরপুর সড়কের ফতেহপুর সেতুটির সংযোগ রক্ষায় বস্তা ফেলার কয়েকদিনের মাথায় ফের ভাঙনের কবলে পড়ে সেতুর দুই মুখ। যেকোন সময় মূল সেতুই ধসে পড়া আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও এই সড়কটি বন্যায় ব্যাপক ভাঙনের শিকার হয়েছে।

বর্তমানে সুনামগঞ্জ থেকে ফাঁড়ি পথ ব্যবহার করে চলাচলকারীরা তাহিরপুর উপজেলায় গেলেও মূলত সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর-ফতেহপুর-আনোয়ারপুর-তাহিরপুর যাতায়াতের প্রধান সড়ক হচ্ছে এটি। এছাড়া এ পথ ধরে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন পথে যাতায়াত করছে।

সওজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেতুর ভাঙন ঠেকাতে জুনে ৪৩ লাখ টাকা বরাদ্দও দিয়েছে সুনামগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু এত টাকা বরাদ্দের পরও সঠিকভাবে কাজ না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভ ও অস্বস্তি দেখা দিয়েছে।

পথচারী আশরাফুল ইসলাম সুমনসহ অনেকেই জানান, সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলার অন্তত হাজারও গ্রামের মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।

সেতুর পাশের বাসিন্দা আরিফুর রহমান জানান, সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের ফতেহপুর সেতুর দুই পাশের এপ্রোচ ভেঙে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।

মোটর সাইকেল চালক জসিম মিয়া জানান, সেতুর এপ্রোচ অংশ বছর খানেক আগ থেকেই ভাঙন দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত আমাদের চলাচল বন্ধ করতে হয়েছে। ভাঙনকৃত সেতু দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। মোটরসাইকেল ও পায়ে হেঁটে সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হয়ে চলাচল করছে।

টমটম চালক জাকির মিয়া জানান, আগে এই সড়ক দিয়ে যাত্রী পরিবহন করতাম, এখন আর করার সুযোগ নেই। কারণ সড়ক তো ভেঙেছে। এখন সেতুর ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যাত্রীরা পায়ে হেঁটে চলাচল করছে।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম বলেন, জিও ব্যাগ ফিলিং করা হলেও পানির গভীরতা থাকায় তা টিকেনি আর বন্যা হওয়ায় ব্রিজটি আরও ক্ষতির মুখে পড়েছে। নভেম্বর মাসের দিকে এখানে আরসিসি ফাইলিং করার কাজ করব।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এসএ)