যুবদল নেতার মামলায় কারাগারে শ্রমিকলীগ সভাপতি, দলে উত্তেজনা

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৪:২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের সহসভাপতির দায়ের করা চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলায় সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি সেলিম আহমেদকে আটকের পর তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এতে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

একজন যুবদল নেতার মামলায় জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি জেল হাজতে তা মেনে নিতে পারছে না আ. লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

তারা বলছেন,  সেলিম আহমেদ আপাদমস্তক একজন রাজনীতিবিদ ও মানবিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।  তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।

মঙ্গলবার ভোরে জেলার পৌর শহরের হাছননগর নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এর আগেগত বৃহস্পতিবার রাতে মোর্শেদ আলম ও তার তিন সহোদরসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আর ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাসননগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মৃত রাজা মিয়া ছেলে জেলা যুবদলের সহসভাপতি অলিউর রহমান মামলাটি করেন। জেলা যুবদলের সভাপতি আবুল মনসুর সওকত বলেছেন ওলিউর রনমান জেলা যুবদলের সহ সভাপতি পদে আছে। তিনি রাজনীতিতে একজন সক্রিয় নেতা।

এই মামলায় মোর্শেদ আলমসহ দুজন জেল হাজতে আছেন। আর মোর্শেদ আলম সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সেলিম আহমেদের আপন চাচাত ভাই। 

তবে মামলার অভিযোগপত্রে কোথাও জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি সেলিম আহমেদের নাম বা রাজনৈতিক ক্ষমতার ইঙ্গিত ছিল না। ঘটনার ৬ দিন পর মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) ভোরে জেলার পৌর শহরের হাছননগর নিজ বাসা থেকে ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

সুনামগঞ্জ জেলার সচেতন মহল বলছেন, সুনামগঞ্জের রাজনীতি দিন দিন যে কত খারাপ হচ্ছে তা বিগত কয়েক মাস ঘাটলেই বুঝা যায়। আফসোস ভালো মানুষরা রাজনীতি ছেড়ে দিবে। তবে এর আগের দিন তাহিরপুরে স্মরণকালের শোক সমাবেশ করে অনেকের ‘বদ নজরে’ পড়ে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা শহরের একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, ক্ষমতাশীন দলের একজন প্রভাবশালী নেতাকে এভাবে ‘হাওয়াই মামলায়’ জড়ানোয় আওয়ামী লীগের জন্য কলংকজনক।

আমিন উদ্দিন,শরীফ উদ্দিনসহ জেলার শহরের অনেকেই জানান, যিনি ৩০ কোটি টাকা দিয়ে সরকারের কাছ থেকে যাদুকাটা ইজারার নিয়েছেন, তিনি কিভাবে চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলার আসামি হন৷ বরং যারা যাদুকাটায় বিনা পয়সার ভাগিদার না করায় ক্ষুব্ধ তাদের ষড়যন্ত্রে আজ তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা আ,লীগের সদস্য ও বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার ভাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ওই মামলার বাদীর সঙ্গে আমার চাচাতো ভাইদের ব্যবসায়িক বিরোধ রয়েছে আমার ভায়েইর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় আসামিও না তার পরও এই মামলার জেরের সুযোগ নিয়ে সেলিমকে ফাঁসানো হয়েছে। এর বিচার আল্লাহ করবে। 

জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মুবিন আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, একজন যুব দল নেতার দায়ের করা মামলায় জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সেলিম আহমেদকে জড়ানো হয়েছে। তালিকাভুক্ত আসামি না হলেও তাকে আটক করানো হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। 

মামলার বাদী ও জেলা যুবদলের সহসভাপতি ওলিউর রহমান জানান, সেলিমকে কেন আটক করা হয়েছে তিনি জানেন না। 

মামলার তদন্তের স্বার্থে সেলিম আহমেদকে আটক করা হয়েছে বলে জানান সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। তিনি আরও জানান, কে কোন দল করে সেটা দেখার বিষয় না। যে কেউই আইনের আশ্রয় নিতে পারে। 

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এআর)