কোথায় পালিয়ে ঘাতক ক্রেন চালক? গ্রেপ্তার কি যখন-তখন?

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৬:১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

উত্তরায় কাত হয়ে যাওয়া ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে প্রাইভেট কারের পাঁচ যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্রেনচালক আল আমিন হৃদয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে। যেকোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। দুর্ঘটনার পর থেকে ক্রেনচালক পলাতক।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ক্রেনটি কাত হয়ে যাওয়ার সময় চালক বেরিয়ে পাশেই অবস্থান করছিলেন। তিনি মূল চালক কি না এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের পরই জানা যাবে ক্রেনটি মূল চালক চালাচ্ছিলেন, নাকি অন্য কেউ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, ক্রেনটি যখন উল্টে যায় চালক তখন আসন থেকে বেরিয়ে আশপাশে থেকে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন। দুর্ঘটনার বিষয়টি যখন বড় আকার ধারণ করে তখন তিনি ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

নিজের মোবাইল ফোন বন্ধ করার আগে তার লোকেশন বনানী ছিল বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র।

জানা গেছে, হৃদয়ের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের পাইকাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম আক্তার হোসেন। ঢাকার কদমতলীর পূর্ব জুরাইনে থেকে বিআরটি প্রকল্পে কাজ করতেন হৃদয়।

উত্তরায় প্রধান সড়কে গত সোমবার দিনের বেলা কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই বিআরটি উড়াল সড়ক প্রকল্পের গার্ডার সরানোর কাজ করছিল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ভার বইতে না পেরে ক্রেন কাত হয়ে গেলে গার্ডার পড়ে যায় প্রাইভেট কারের ওপর। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুজন।

 

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘পুলিশ ক্রেনটি জব্দ করেছে। এটি মামলার প্রধান আলামত।’

ক্রেনচালকের গ্রেপ্তারের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ‍ওসি বলেন, ‘ক্রেনের চালক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে। যেকোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।’

ক্রেনটি দিয়ে অনেক গার্ডার সরানো হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন- এমন তথ্য দিয়ে উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোকছেদ আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘তবে ওই দিন কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটল, সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। চালকের না ক্রেনের ত্রুটি ছিল, সেটি নিয়ে নানাজনে নানা কথা বলছেন।’

দুর্ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে। এ ঘটনায় দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুর্ঘটনার পরেই উত্তরা পশ্চিম থানায় ক্রেন চালক, প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।

সোমবার বিকালে রাজধানীর উত্তরার জসিমউদ্দিন মোড়ে বেলা সাড়ে তিনটার পর আড়ংয়ের সামনে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান- গাড়ির চালক রুবেল মিয়া, ফাহিমা, ঝর্না, জান্নাতুল ও জাকারিয়া।

দুর্ঘটনার শিকার প্রাইভেট কারটি নরসিংদীতে বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে বর-কনে ও তাদের কয়েকজন স্বজনকে নিয়ে আশুলিয়া যাচ্ছিল। তবে সৌভাগ্যক্রমে নববধূ রিয়ামণি ও তার স্বামী হৃদয় বেঁচে যান।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এসএস/মোআ)