চাঁদপুর-ঢাকা এক লাফে লঞ্চভাড়া বাড়ল ৫০ টাকা, যাত্রীদের মাথায় হাত

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ১৮:১১

শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে অস্বাভাবিকভাবে লঞ্চের ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাঁদপুরের যাত্রীরা । তারা লঞ্চের ভাড়া কমানোর জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

 

যাত্রীরা বলছেন, চাঁদপুর-ঢাকা যাতায়াত করতে আগে ১৫০টাকা দিতাম। এখন হঠাৎ লঞ্চের ভাড়া ১৫০ টাকা থেকে এক লাফে ২০০ টাকা দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের আয় কম। আমরা ৫০টাকা বৃদ্ধি করায় আমাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল।

 

সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরপর লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয় আলোচনা চলছিল।  মঙ্গলবার থেকে হঠাৎ করে লঞ্চের ভাড়া ৩০ ভাগ বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছে লঞ্চের সাধারণ যাত্রীরা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লঞ্চঘাট চাঁদপুর। বিলাস বহুল লঞ্চগুলোতে প্রতিদিন চাঁদপুরসহ আশাপাশের বেশ কয়েক জেলার মানুষ এই ঘাট দিয়ে ঢাকা-চাঁদপুর চলাচল করেন। বিশেষ করে ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুর হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়া যাত্রীদেরও এক মাত্র আরামদায়ক রুট হচ্ছে এ চাঁদপুর রুট।

 

চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। প্রথম ১শ কিলোমিটারের মধ্যে ৩০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির ফলে এখন ২.৩০ টাকার সঙ্গে ০০.৭০ টাকা যোগ হয়ে প্রতি কিলোমিটার ভাড়া দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা। চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে আগে ডেকের ভাড়া ছিল ১৫০ টাকা। আজ থেকে ৩০ শতাংশ ৫০ টাকা বাড়িয়ে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা।

 

প্রতিদিন চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে বিলাসবহুল লঞ্চ চলাচল করে ২৪টি, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জের মধ্যে ১৪টি এবং দক্ষিণাঞ্চল ও শরীয়তপুরের মধ্যে ৮টি লঞ্চ চলাচল করে। এসব এলাকার লোকজন ভাড়া বৃদ্ধির কোনো নোটিশ কিংবা ঘোষণা পায়নি।

 

মঙ্গলবার দুপুর থেকে লঞ্চ ভাড়া বৃদ্ধি ঘোষণা করা হয়। তবে ঘাটে গিয়ে দেখা যায় লঞ্চগুলোতে যাত্রী সংখ্যা কম। ভাড়া বৃদ্ধির কারণে অনেক যাত্রীই চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

 

এমভি সোনার তরী-৩ লঞ্চঘাটে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষমাণ। এটি ঢাকার উদ্দেশে চাঁদপুর ঘাট থেকে ছেড়ে যায় বিকাল পৌঁনে ৪টায়। এই লঞ্চের যাত্রী রাবেয়া বেগম ও সোহানা বলেন, আমরা নিচ তলার ডেকের যাত্রী। লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে জানি না। অতিরিক্ত টাকাও নিয়ে আসেনি। লঞ্চে এসে দেখি ১৫০ টাকা ডেকের ভাড়া ২০০টাকা। এমন পরিস্থিতিতে প্রথম পড়লাম।

 

আরেক যাত্রী খুচরা ফল ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম জানান, জরুরি কাজে ঢাকা যেতে হচ্ছে। লঞ্চে এসে দেখি ভাড়া বেশি। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে যেন ভাড়া না ভাড়ানো হয়। কারণ নিরাপদ বাহন হিসেবে আমরা বেশি যাতায়াত করি লঞ্চের মাধ্যমে ।

 

এমভি সোনার তরী ও বোগদাদিয়া-৭ লঞ্চের কেরানিদের (করণিক) সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সরকারিভাবে ৩০ ভাগ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। আমরা সেভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছি। ঢেকের ভাড়া ২০০ টাকা, প্রথম শ্রেণি এসি চেয়ার ৩৫০ টাকা, বিজনেস ক্লাস এসি চেয়ার ৪৫০ টাকা এবং নিচ তলার চেয়ার ২৭০ টাকা। সরকারি ভাড়া আরো বেশি আছে। কিন্তু আমরা কিছু কম নিচ্ছি। সরকার যে ভাবে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করেছে তাতে লঞ্চ মালিক ভাড়া বাড়ানো ছাড়া সম্ভব নয়, তাই ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

 

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এআর)