জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘একাডেমিক জীবনে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক একক বক্তৃতার আয়োজন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ‘একাডেমিক জীবনে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক একক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৭ আগস্ট) ধানমন্ডিতে ইনস্টিটিউট কার্যালয়ে এই একক বক্তৃতানুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
এতে বক্তা হিসেবে একক বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। বক্তৃতানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।
একক বক্তার বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্য আদর্শ রাষ্ট্র রেখে গেছেন। তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা, বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ করে গেছেন। কিন্তু আমরা সেটিকে তছনছ করে দিয়েছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়েও অনেক ইতিহাস আমরা জানি না বা আংশিক জানি। নির্মোহ ইতিহাস ক’জনে লিখেছে। সবাই বলে ২৫ মার্চ থেকে গণহত্যা শুরু হয়েছে। আমি মনে করি ১ মার্চ থেকে দেশে গণহত্যা শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধরে ধরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।’
দেশের কিছু কিছু মানুষের বুক থেকে পাকিস্তানের ডাকটিকিট এখনো সরেনি উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সাবেক এই প্রথিতযশা অধ্যাপক বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের নেতারাই প্রতিবাদ করেননি। যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বলছেন। ঘটনা তো তাই হয়েছে। আমরা বলি সেনাবাহিনীর একাংশ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। এটাও তো ঠিক নয়। তৎকালীন সেনাবাহিনীর অনেকেই জানতেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হবে। কেউ প্রতিবাদ করেননি।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘পাকিস্তান ছিল রেসিস্ট দেশ। আর বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। তিনি সারাজীবন বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছেন, স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। তার স্বপ্ন দেখা থেকেই বাংলাদেশ বাস্তবে রূপ লাভ করেছে।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখালেখি কম হয়েছে এটি নিঃসন্দেহে সত্য। কিন্তু যেসব পণ্ডিত ব্যক্তিরা সমৃদ্ধ লেখা লিখেছেন তারা অনেকেই নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরে তাকে আরেকবার হত্যা করা হয়েছে যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট বন্ধ করা হয়েছে। এটি আমাদের জন্য লজ্জার। যেই বঙ্গবন্ধুর নামে মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশ- সেটি নিয়ে যখন একটি ইনস্টিটিউট হয়, রাজনীতির পটপরিবর্তন হতেই পারে, তাই বলে এরকম একটি কাজকে বন্ধ করে দেয়ার দুঃসাহস দেখানো হয়েছে। সেটিকে মেনে নেয়ার মতো সংস্কৃতিও আমাদের সমাজে ছিল। সেটিই বড় প্রমাণ- কেন অ্যাকাডেমিক রিসার্চ হলো না। তারপরেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত কিছু মূল্যবান দলিলপত্র আগলে রেখেছেন, যে কারণে আমরা এটি আবার শুরু করতে পেরেছি। গোপালগঞ্জে এই ইনস্টিটিউট আবার আমরা ফিরে পেয়েছি। সেখানেও পুরোদমে কাজ শুরু করা হবে। খুব শিগগিরই এই ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’
বিশিষ্ট এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘এই ইনস্টিটিউটকে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে তৈরি করতে আমরা বদ্ধপরিকর। এটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ-গবেষক ও পণ্ডিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এবং তাদের প্রজ্ঞাদীপ্ত মতামতের আলোকে সাজানো হবে। যাতে করে আগামী তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারে। তারা যেন বিশ্বে মাথা উঁচু করে বলতে পারে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত এক অনন্য বাংলাদেশের সুনাগরিক।’
একক বক্তৃতানুষ্ঠানে আরো ছিলেন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান শাহীনসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, গবেষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।
(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এলএ)
সংবাদটি শেয়ার করুন
শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষা এর সর্বশেষ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্যকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের অভিনন্দন

‘প্রযুক্তি সুবিধাও অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া আবশ্যক’

বিজয়ের মাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কর্মসূচি

জবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা, আহত ১০

কুবিতে কাল থেকে সশরীরে ক্লাস

বিজয়ের মাসে হাবিপ্রবিতে মাসব্যাপী কর্মসূচি

হাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী

ঢাবিতে বিশাল পতাকা নিয়ে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’
