দেশ সেরা ডাটা সায়েন্টিস্ট ও ইঞ্জিনিয়ারদের পুরস্কার দিল রবি

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ২২:০৩ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২২, ২২:১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দেশের ডাটা সায়েন্টিস্ট ও ডাটা ইঞ্জিনিয়ারদের মেধার স্বীকৃতি দেওয়ার বৃহত্তম প্ল্যাটফর্ম ডাটাথনের দ্বিতীয় ধাপে সমাপনী অনুষ্ঠান রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

ডাটা হ্যাকাথনের দ্বিতীয় আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিম ইন্সটিঙ্কট। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে নাম্পি এবং তৃতীয় হয়েছে ভাইকিং রেইডার্স। প্রাইজ মানি হিসেবে চ্যাম্পিয়ন দল পেয়েছে দুই লাখ, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী দল পেয়েছে দেড় লাখ এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী দল পেয়েছে ১ লাখ টাকা।

ডাটাথনের দ্বিতীয় সংস্করণে সেরা ডাটা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নুরেন শামস ও ইয়ামিনুর রহমান এবং সেরা ডাটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে আবদুল বাসিত ও পার্থ ঘোষ প্রত্যেকে পেয়েছেন ১ লাখ টাকা পুরস্কার।

বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাই কমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম।

সমাপনী অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও পিটার প্যান জুনফেং ও উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘মোবাইল অপারেটর রবি আমার অনেক তৃপ্তির জায়গা। কারণ রবির নামের অক্ষর আমার হাতে লেখা। দেশ ডিজিটালাইজেশন হয়েছে। ২০২১ সালের পরে এসে কোনো শিশুকেও জিজ্ঞাসা করলে সেও বলে দিতে পারবে ডিজিটালের মানে কি। ২০২১ সালকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ নিয়ে কাজ করেছি। এখন ২০৪১ সালে দেশ স্মার্ট  বাংলাদেশ হবে সেই লক্ষে এগিয়ে চলেছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রযুক্তি শিক্ষা, কারিগরী শিক্ষা, ইংরেজী শিক্ষার পাশাপাশি শুদ্ধ করে বাংলা বলার শিক্ষাও দিতে হবে। দেশের মানুষ ভালোভাবে বাংলাতেও কথা বলতে পারে না। একটি দেশের জন্য ডাটা সম্পদ। আমাদের সমস্যা হচ্ছে দেশের ডাটা অন্যরা ব্যবহার করতে পারে, আমরা ব্যবহার করতে পারি না। এটা নিয়ে এখন আমরা কাজ করছি। ওটিটি গাইড লাইনের খসড়া নিয়ে কাজ চলছে। বাংলাদেশের তথ্য বাংলাদেশে থাকতে হবে। দেশের অনুমতি ছাড়া বিশ্বের কেউ আমাদের ডাটা ব্যবহার করুক তা আমরা চায় না। ইচ্ছামতো ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।’  

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘দেশের প্রচুর শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের সবার চাকরি দেওয়া সম্ভব না এজন্য তাদের ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে নিয়ে যেতে হবে। এর জন্য তাকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এতে তারা উপার্জনে সক্ষম হবে।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘ডেটা সাইন্সকে কীভাবে প্রসার ঘটানো যায় সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এটার উপর খুব জোর দিয়েছেন। ডেটা সিকিউরিটি নিয়ে কাজ হচ্ছে। স্বল্প সময়ে তরুণ সমাজকে কীভাবে দক্ষ করা যায় সে জন্য কাজ করছি। শিক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নতুন কারিকুলাম যোগ করা হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে ডাটার প্রয়োজনীতা নিয়ে একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করা হয়। সেখানে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষাঙ্গনের ভূমিকা ও সরকারের ভূমিকার সমন্বয়ের কথা বলা হয়। তিন দিকের সম্মিলনে দেশের ডাটার সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কার্যকরী অবস্থা তৈরি হবে বলে মত দেওয়া হয়।  

অনুষ্ঠানে রবি’র অ্যাক্টিং সিইও অ্যান্ড চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার এম রিয়াজ রশীদ বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা যে ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলছি এর জন্য প্রয়োজন হবে দক্ষ ডাটা সায়েন্টিস্ট ও ডাটা ইঞ্জিনিয়ারের। ডাটাথনের দ্বিতীয় সংস্করণ আয়োজনের মাধ্যমে শীর্ষ ডিজিটাল অপারেটর হিসেবে এই দিকটির ওপর আলোকপাত করতে পেরে আমরা গর্বিত। আমাদের বিশ্বাস ডাটাথনের দ্বিতীয় সংস্করণ দেশের ডাটা সায়েন্টিস্ট ও ডাটা ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। আয়োজনটি সফল করে তোলার জন্য অংশগ্রহণকারী, পার্টনার প্রতিষ্ঠান এবং বিচারকদের ধন্যবাদ।

প্রসঙ্গত, ডাটাথনের দ্বিতীয় সংস্করণে ১১টি দেশ থেকে ২ হাজার ৮শ’র বেশি প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। তীব্র প্রতিযোগীতার পর ২৫টি দলে ভাগ হয়ে ১শ’ জন প্রতিযোগী চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। এরপর দুই দিনব্যাপী হ্যাকাথনে কঠোর প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয় নির্ধারিত ২৫টি দল।

ডাটাথনের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডাটা সায়েন্টিস্ট এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) পেশাজীবীরা। উনাদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক পল মরিসে, গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর, এআই/বিডিএ টিএম ফোরাম; মো. আনোয়ারুল আরিফ খান, রেজাল্টস ম্যানেজমেন্ট এক্সপার্ট, অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই); রামানা জামপালা, প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সিইও অ্যাভলিনো; হুয়াং ওয়েমিং, হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সল্যুশন সেলস, ক্লাউড ডিপার্টমেন্ট, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড এবং মোহাম্মদ আরিফ, ডাটা সায়েন্টিস্ট, কগনিজেন্ট।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ‘ডাটা সায়েন্স ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্যানেল ডিসকাশনে ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) প্রফেসর ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের প্রেসিডেন্ট রাসেল টি. আহমেদ এবং রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার রুহুল আমিন ।

প্যানেল ডিসকাশনটি সঞ্চালনা করেন রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম।

(ঢাকাটাইমস/১৭আগস্ট/এসকেএস)