'বালুখেকো' সেলিমপুত্র শান্ত খানের ব্যাংক হিসাব তলব দুদকের, শিগগিরই জিজ্ঞাসাবাদ

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০২২, ১৯:৩২ | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২২, ২০:০৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

অবৈধ ব্যবসা ও কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে 'বালুখেকো' সেলিম খানের ছেলে শান্ত খানের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকারকে শান্ত খানের বিষয়গুলো অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দেশের ৫৮টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর দেওয়া দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়- মো. শান্ত খান, পিতা সেলিম খান, বাচ্চু খানের বাড়ি, গ্রাম- লক্ষ্মীপুর, ডাক- বহরিয়া বাজার, উপজেলা ও জেলা চাঁদপুর এর বিরুদ্ধে অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার নামে আপনার ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় পরিচালিত হিসাবের (যদি থাকে) হিসাব বিবরণীসহ নিম্নবর্ণিত রেকর্ডপত্র/তথ্যাদি পর্যালোচনা প্রয়োজন।

দুদকের চাওয়া রেকর্ডপত্র/কাগজপত্রাদির মধ্যে রয়েছে- শান্ত খানের নামে ব্যাংকের কোন শাখায় ব্যাংক হিসাব, সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড থাকলে ব্যাংক হিসাবের হিসাব খোলার ফর্ম, কেওয়াইসি এবং হিসাব বিবরণী। ঋণ হিসাব সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য (জামানত এবং ঋণ পরিশোধের তথ্যসহ) এবং হিসাব বিবরণী। এবং সঞ্চয়পত্র, ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য।

দুদকের চাহিদামত তথ্যাদি/রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ছায়ালিপি ৩১ আগস্টের মধ্যে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকারের নিকট প্রেরনের জন্য বলা হয়েছে।

শান্ত খানের আর্থিক লেনদেনের তথ্য চেয়ে পাঠানো ৫৮টি ব্যাংক হলো- এবি ব্যাংক লিমিটেড, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক আল-ফালাহ লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, বেসিক ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, যমুনা ব্যাংক লিমিটেড, জনতা ব্যাংক লিমিটেড, মেঘনাব্যাংক লিমিটেড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাষ্ট ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সীমান্ত ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক লিমিটেড, ষ্টাট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড, দি ফার্মারস ব্যাংক লিমিটেড, পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড, এইচএসবিসি, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড, উরি ব্যাংক ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, গত ১৪ আগস্ট সাড়ে ৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় চাঁদপুরের বিতর্কিত চেয়ারম্যান সেলিম খানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর আগে গত ১ আগস্ট সেলিম খানের বিরুদ্ধে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এরপরই তার ছেলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়।

দুদক সূত্র জানায়, সেলিম খানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলাকালীন সময়ে তার ছেলে মো. শান্ত খানের নামে ব্যবসার পুঁজি, কোম্পানির শেয়ার, জমি ও বাড়ির মূল্য, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ মোট ১৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এসব সম্পদের সত্যতা যাচাই করতেই মূলত ৫৮টি দেশি-বিদেশি ব্যাংকের এমডি ও সিইও এর কাছে চিঠি পাঠানো হয়। এছাড়া শান্ত খানের সম্পদের উৎসের সঠিকতা যাচাইয়ে পৃথক অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।

ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/এসএন)