পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলা তালহা এখন কোথায়?

প্রকাশ | ১৮ আগস্ট ২০২২, ২০:২৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরদিন সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু খুলে এক যুবকের বানানো টিকটক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। পরে তাকে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেই বায়েজিদ তালহার কথা মনে আছে?

নাট-বল্টু খোলার ঘটনায় তালহার বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় মামলা হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড দেয় আদালত। এরপর কোথায় আছেন তিনি?

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তালহার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাটি এখন তদন্ত করছে সিআইডি। রিমান্ড শেষে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, মামলাটি তদন্ত চলছে। বর্তমানে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। সেটা পেলেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

জানা গেছে, বর্তমানে তালহা শরীয়তপুর জেলা কারাগারে আছেন। বায়েজিদ তালহা নামে তিনি পরিচিত হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম মো. বাইজীদ।

তালহা গ্রেপ্তারের পর এক‌ই ইস্যুতে ভিডিও ধারণ করে আরেক যুবক। সূত্র জানায়, কায়সার আহম্মেদ নামের ওই যুবক পালিয়ে কাতার চলে গেছেন।

শরীয়তপুর জেলা কারাগারে বন্দি তালহা একজন সাধারণ বন্দির মতোই জীবন কাটাচ্ছেন। রিমান্ড চলাকালে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার চার্জশিট দেবে পুলিশ।

মামলার তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত চলছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পেলেই আমরা মামলার কাজ শেষ করব। বর্তমানে ফরেনসিক পেন্ডিং আছে।’

ফরেনসিকে কোন বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সেই (তালহা) যে ইউটিউবে ভিডিওটা প্রচার করেছে, সেই বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে।’

সেদিন কী ঘটেছিল

এ বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিপুলসংখ্যক মানুষ মূল সেতুতে উঠে পড়েন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরে তাদের সরিয়ে দেন। পরদিন সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা।

এরই ফাঁকে সেতুর নাট-বল্টু খুলে ভিডিও করেন বাইজীদ, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ৩৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবক সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বল্টুর নাট খুলছেন। যিনি ভিডিও করছিলেন, তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দ্যাহো।’

নাট হাতে নিয়ে বাইজীদ বলেন, ‘এই হলো পদ্মা সেতু আমাদের...পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে।’ ওই সময় পাশে থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাইরাল কইরা ফালায়েন না।’

তালহার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর তেলীখালী গ্রামে। স্থানীয় গাবুয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পটুয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পরে ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।

নাট-বল্টু ঘটনায় তালহার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকার প্রধানের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। তারা বলেন, এই ধরনের কাজ তালহার করা ঠিক হয়নি। এজন্য তারা অনুতপ্ত।

ছবি বিতর্ক

বায়েজিদ তালহার সঙ্গে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেসময় গোলাম রব্বানী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে তালহাকে চিনি না। আর বহু বছর আগের একটা ছবি নিয়ে যারা এসব মন্তব্য করছে তারা মানসিকভাবে অসুস্থ বলে মনে করি।’

(ঢাকাটাইমস/১৮আগস্ট/মোআ)