বড় বোনের সঙ্গে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ছোট বোনকে অপহরণ

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০২২, ১৮:৪২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের রঙ মিস্ত্রী সায়ের আলম পাভেল (৩৪)। নিজেকে কখনো ‘উচ্চশিক্ষিত’ কখনো ‘ম্যাজিস্ট্রেটের ছেলে’ বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ে একই এলাকার খাদিজা আক্তার নামে এক তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। কিন্তু প্রস্তাব গ্রহণ না করায় প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পাভেল। প্রতিশোধ নিতে পরে খাদিজার ছোট বোন আয়েশাকে লন্ডন প্রবাসী ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করা হয়।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচএম আজিমুল হক এসব কথা জানান।

বৃহস্পতিবার রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পাভেল, তার বন্ধু জাহাঙ্গীর ও সহযোগী আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে আয়শাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি আজিমুল হক জানান, আয়েশার বাবা-মার প্রতি আক্রোশ থেকেই মুক্তিপণ আদায় করতে চায় পাভেল। পরে আয়েশাকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়ার উদ্দেশ্যও ছিল তাদের। বড় বোনের সঙ্গে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তারই ছোট বোনের ওপরে ক্ষোভ ঝাড়েন পাভেল।

ডিসি বলেন, তরুণী খাদিজা আক্তারকে প্রেমের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন পাভেল। কিন্তু খাদিজা পাত্তা দেননি। দুই-তিন বছর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ায় খাদিজার ওপর ক্ষিপ্ত হন পাভেল। পরে প্রতিশোধ নিতে এই কাজ করে বলে স্বীকার করেছেন অপহরণকারী পাভেল।

পুলিশ কর্মকর্তা আজিমুল হক বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীকে গত ১৪ আগস্ট তেজগাঁও থেকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর নিয়ে যায়। পরে ওই মেয়ের পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে পাভেল। পরে ১৮ আগস্ট অপহরণের শিকার মেয়েটির বাবা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি অপহরণের মামলা করে। মামলার তদন্তে নেমে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে পাভেলের সহযোগী জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে অপহরণের শিকার তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, পাভেলের স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে। তারপরেও বিষয়টি গোপন রেখে আয়েশাকে নিয়ে যায়। পরে পাভেল আয়েশাকে আটকে রেখে বন্ধু জাহাঙ্গীরের মাধ্যমে তার মুদি দোকানি বাবাকে ফোন করায়। পরে ফোন করে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে জাহাঙ্গীর। টাকা না দিলে মেয়েকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিবে বলে হুমকিও দেয়া হয়। তাছাড়া এই কথা পুলিশকে জানালে মেয়েকে চিরতরে গুম করে দিবে বলেও ভয় দেখায়। তিন দিন ভয়ের মধ্যে থাকার পর গত ১৮ আগস্ট  তরুণীর বাবা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় অপহরণের একটি মামলা করেন।

উঠতি বয়সের সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের নজর রাখার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারনেটের যুগে ছেলে-মেয়েরা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে এসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে অভিভাকদের।

গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় দুটি অপহরণ মামলার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

(ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/এএইচ/কেএম)