পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা চান ফখরুল

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০২২, ২২:২৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ভারতের কাছে অনুরোধের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

 

সরকার ভারতের আনুকূল্যে টিকে আছে কিনা- এমন প্রশ্ন তুলে ওই বক্তব্যের বিষয়ে সরকার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পরিপূর্ণ ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন তিনি। এমনকি বিষয়টিতে তিনি ভারতের কাছেও ব্যাখ্যা চেয়েছেন।

 

শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় এই ব্যাখ্যা চান বিএনপি মহাসচিব।

 

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারত সরকারকে সেটা করার অনুরোধ করেছি।’

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গে সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুদিন আগে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা সমাবেশ করে হুমকি দিয়েছেন। এতই যদি হুমকি-ধমকি দেন, তাহলে আপনাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য, প্রধানমন্ত্রীকে টিকেয়ে রাখার জন্য ভারতের সাহায্য দাবি করে কেন? আমরা এই কথাটার ব্যাখ্যা চাই। আমরা জানতে চাই এই সরকারের কাছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এবং ভারত সরকারের কাছেও। আজকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, সেই কথার অর্থ কি? তাতে কি এটা দাঁড়ায় যে, এই সরকার টিকে আছে ভারতের আনুকূল্যে? এটা অত্যন্ত জরুরি কথা।’

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘সড়ক ও সেতু মন্ত্রী, যিনি আবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, তিনি অনেক কথা বলেন। এতই দক্ষ আপনারা, তাহলে আপনারা মন্ত্রী থাকার সময় উত্তরায় গার্ডার পড়ে ৫ জন মানুষ মারা যায়? গ্রেপ্তার করলেন ড্রাইভার, গার্ডকে। এর দায় প্রথমেই নিতে হবে সেতুমন্ত্রীকে। প্রকল্প পরিচালককে জবাব দিতে হবে। তাদের কাউকে তো গ্রেপ্তার করা হলো না।’

 

ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিবাজ, চোর-ডাকাতের সরকার। এদের কোনো বৈধতা নাই। রাতের অন্ধকারে নির্বাচন করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। এরা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে।’

 

গুম ও মানবাধিকার হরণের প্রসঙ্গ আসায় সরকারের মাথা ঘুরে গেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার যাওয়ার আগে বলে গেছেন, এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমস্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং এর বিচার করা দরকার। আমাদের তথ্যমন্ত্রী আবার হাইকমিশনারকে সবক দিচ্ছেন যে প্যালেস্টাইন দেখেন, বার্মা দেখেন, আরে আগে আপনি বাংলাদেশ দেখেন। এই সরকার হাজার হাজার মানুষকে হত্যা, গুম করেছে। আয়নাঘরের বিষয়ে জনগণ জানতে চায়।’

 

আওয়ামী লীগ দুর্নীতি, লুটপাট করে দেশের মানুষের পেটে হাত দিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সমস্ত জিনিসপত্রের দাম তিন-চার গুণ বেড়ে গেছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কথা এখন বলা হচ্ছে। কিন্তু আগে থেকে কেন এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি? তেলের দাম এখন আবার কমতে শুরু করেছে। এখনো সরকার তেলের দাম কমাচ্ছে না।

 

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদরেজ জামান ও সাইফুল ইসলাম ফিরোজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, যুব দলের সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী, এসএম জিলানী, ফখরুল ইসলাম রবিন প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

 

(ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/ইএস)