‘রাষ্ট্রবিরোধী’ কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাবি ছাত্রকে থানায় সোপর্দ, সংশ্লিষ্টতা পায়নি পুলিশ

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০২২, ০২:৩০

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে নিজ বিভাগের বন্ধুদের ‘চ্যাটগ্রুপে’ দেয়া একটি বার্তাকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা’ আখ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রকে পুলিশে সোপর্দ করেছে হল প্রশাসন। তবে খোঁজ খবর নেয়ার পর পুলিশ বলছে, মেফতাহুল মারুফ নামের ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজের কোনো সংশ্লিষ্টতা মেলেনি। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারুফকে পুলিশে সোপর্দ করেছিল হল প্রশাসন। অভিযুক্ত মারুফ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র।

জানা যায়, গত বুধবার বন্ধুদের চ্যাটগ্রুপে ২০০৫ সালের সিরিজ বোমাহামলা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে অভিযুক্ত ছাত্র একটি ম্যাসেজ দেন। 

ম্যাসেজটি হলো:
❝সিরিজ বোমা হামলা চালাইছে জামায়াতুল মুজাহিদিন নামে একটা জঙ্গি সংগঠন বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি জামায়াত। এই ক্ষমতায় থাকার জন্য যদি দায়ী তারা হয় তাহলে ২০০৮-বর্তমানে গুলশানসহ সকল জঙ্গি হামলার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ।❞

ম্যাসেজের একটি ‘স্ক্রিনশর্ট’ জিয়া হলের ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে পৌঁছালে নেতা-কর্মীরা বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মারুফকে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে নিয়ে যান। এর আগে মারুফকে কিছু মারধোরও করা হয় বলে তার ঘনিষ্ঠ সহপাঠীরা অভিযোগ করেছেন। পরবর্তীতে হল প্রাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, এটা হল প্রশাসনের বিষয়। এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ কথা বলবেন।

মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ হলের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে আমাকে জানায়। কিছু নিষিদ্ধ সংগঠনের পেইজে লাইক দেয়া ছিল তার। সে তার ডিপার্টমেন্টের গ্রুপে যে ম্যাসেজটি লিখেছে সেটি অনেককে সংক্ষুব্ধ করেছে। আমি তথ্য-প্রমাণ দেখে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছি।

কোনো তদন্ত না করেই কেন থানায় দেয়া হলো- এমন প্রশ্নে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু তদন্ত করা সম্ভব আমরা সেটা করেছি। এরপর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। বাকি কাজ তারা করেছে। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শুক্রবার রাতে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদূত হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, তার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তার এলাকায় খোঁজ নিয়েছি। তার পরিবারের বড় দুই রাজনৈতিক দলের সাথেই সংশ্লিষ্টতা আছে৷ তবে ব্যক্তিগতভাবে তার কোনো দলের সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই। সে যে মন্তব্য করেছে এটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত মতামত। তাই আমরা তদন্তের পরে তাকে একটি মুচলেকা দেয়ার মাধ্যমে তার বিভাগের শিক্ষকের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছি।

(ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/এসকে/ইএস)