ইউএনও মনদীপ ঘরাইয়ের ‘কাব্যমায়া’

প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০২২, ১১:১০ | আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২২, ১১:২০

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে গেলেই চোখে পড়বে নান্দনিক এক দেয়াল। দেয়াল মানুষকে কোনো কিছু থেকে বিরত রাখার প্রতীক হলেও এ দেয়ালটি মানুষকে যুক্ত করবে অন্যরকম মায়ায়। কবিতার মায়ায়। দেশে এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। উদ্যোগটি গ্রহণ করেছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনদীপ ঘরাই। বাংলার খ্যাতিমান ও নবীন কবিদের ১৩৬টি কবিতা নিয়ে সাজানো হয়েছে দেয়ালটি।

১৫ ফুট চওড়া আর ১২ ফুট উচ্চতার এ কংক্রিটের দেয়ালটি তৈরি হয়েছে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও মনদীপ ঘরাইয়ের সম্মিলিত অর্থায়নে। দেয়ালের ওপর সাদা টাইলসে খোদাই করে রাখা হয়েছে কবিতাগুলো।  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত, শামসুর রাহমান, হেলাল হাফিজ, আহমদ ছফা, নির্মলেন্দু গুণ প্রমুখ বরেণ্য কবি থেকে শুরু করে এ প্রজন্মের কবিদের কবিতা স্থান পেয়েছে দেয়ালে।
শরীয়তপুর জেলার মাটিতে যেহেতু গড়ে উঠেছে কাব্যমায়া, তাই এ মাটির কবিদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অতুল প্রসাদ সেন, শ্যামসুন্দর দেবনাথসহ ১৩ জন শরীয়তপুরের কবির কবিতা গাঁথা আছে এ দেয়ালে।

দেয়ালটির উদ্যোক্তা মনদীপ ঘরাই বলেন, ‘কবিতা শুধুই বইয়ের মলাটে কিংবা খাতার পাতায় আটকে থাকার প্রথা ভাঙতেই এই উদ্যোগ। প্রযুক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ মানুষকে বই পড়াতে আকৃষ্ট করতে কাব্যমায়া বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে। কবিতার প্রতি, মননশীল কাজের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর দায়বদ্ধতা থেকেই উদ্যোগটির স্বপ্ন দেখেছিলাম। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমার স্বপ্নটি প্রাণ পেয়েছে। এ অনেক বেশি প্রশান্তির।’

এ দেয়ালের জন্য কবিতা লিখেছেন শরীয়তপুরের তরুণ লেখক আবিদ হাসান অরণ্য। তিনি বলেন, ‘আমার মতো ক্ষুদ্র লেখকের লেখা দেয়ালটিতে স্থান পাওয়ায় আমি আপ্লুত।’

দেশে এমন দেয়াল এটাই প্রথম। আর বাংলা কবিতার কথা বিবেচনা করলে হয়তো এটাই বিশ্বের প্রথম।

দেয়ালটির কবিতাগুলো নিয়ে একই নামে একটি প্রকাশনাও বের হচ্ছে। এটি সম্পাদনা করবেন কাব্যমায়ার উদ্যোক্তা কবি ও কথাসাহিত্যিক মনদীপ ঘরাই। সরকারি কর্মকর্তার পাশাপাশি তিনি নিজে একজন কবি হলেও কাব্যমায়ায় রাখেননি তার কোনো কবিতা। তার মতে, ‘এ অনুপস্থিতিই হবে গাঢ় উপস্থিতি’।

এর আগে যশোরের অভয়নগরে ভূমি অফিসে দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক থিমপার্ক স্বাধীনতা অঙ্গন নির্মাণ করেছিলেন মনদীপ ঘরাই। গত বছর তার হাত দিয়েই তার বাংলোর দেয়ালে গড়ে তোলেন দেশের প্রথম উন্মুক্ত দেয়াল পাঠাগার ‘একুশ’।

কাব্যমাায় যাদের কবিতা রয়েছে

পাথরের দেয়ালটিতে স্থান পেয়েছে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত, জীবনানন্দ, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, নির্মলেন্দু গুণ থেকে শুরু করে আহকের তরুণ পর্যন্ত। এতে রয়েছে

আনজীর লিটন, অসীম সাহা, অনিক খান, রোমেন রায়হান, ওবায়েদ আকাশ, চন্দ্রাবতী, সুফিয়া কামাল, আহসান হাবিব, আখতারুজ্জামান আজাদ, পলাশ মাহবুব, আসাদ চৌধুরী, রিশাদ হুদা, কামাল চৌধুরী, দীপন দেবনাথ, মোহাম্মদ সাদিক, ফারুক আফিনদী, সহস্র সুমন, পিয়াস মজিদ, তামিম ইয়ামীন, হেলাল হাফিজ, আবুল হাসান, রুদ্র, মাশরুর তাপস, সরকার আমীন, ইমরান মাহফুজ, জুননু রাইন, আলতাফ শাহনেওয়াজ,  সৌমেন্দ্র গোস্বামী, শক্তি চট্টোপাধ্যায়,  টোকন ঠাকুর, আসাদ মান্নান, অনুপ বিশ্বাস, সালমা আক্তার প্রমুখের কবিতা।

(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/এফএ)