হানাদার বাহিনীর মাইন বিস্ফোরণে পা হারানো শুকুর আলী কেমন আছেন?

প্রকাশ | ২৯ আগস্ট ২০২২, ১৭:০৫ | আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২২, ১৭:০৮

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা

দেশ স্বাধীন হওয়ার ৩ মাস পর পাক হানাদার বাহিনীর পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে পা হারানো শুকুর আলীর আজও মেলেনি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা। দামুড়হুদা বাসট্যান্ড মোড়ে ঘাস বিক্রি করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। শুকুর আলী দামুড়হুদা মাদ্রসা পাড়ার মৃত ওয়াদ আলীর ছেলে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুকুর আলী অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়ে অনেক দুঃখ-কষ্টে বড় হন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আনুমানিক ৩ মাস পরে দামুড়হুদা ব্রাক মোড় সংলগ্ন মাঠে পাক হানাদার বাহিনীর মাটিতে পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে একটি পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন তিনি। পরে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চিকিৎসায় বেঁচে ফেরেন তিনি। কিন্তু একটি পা হারাতে হয় তাকে।বর্তমানে তিনি দামুড়হুদা বাসট্যান্ড মোড়ে মাত্র দুইশত টাকা জোন হাজিরাই অন্যের ঘাস বিক্রি করে কোনো রকমে সংসার চালান। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে তিনি খুব কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। অনেক ঘোরা-ঘুরি করে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ছাড়া এখন পর্যন্ত সরকারের কোন সুযোগ সুবিধা পায়নি তিনি। শুকুর আলী খুব দুঃখ প্রকাশ করে এই প্রতিবেদককে বলেন যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল প্রায় ১৭ বছর। সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করলেও মুক্তি বাহিনীকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন তিনি ও তার পরিবাব। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বর্তমান সময়ে এখন মাননীয়  প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার, কোন চালের কার্ড, আটার কার্ড, বয়স্ক ভাতার কার্ড আমি পাইনি। তিনি আরও বলেন, কত মানুষ কত কিছু পাই, কিন্তু কেন জানিনা আমি কিছুই পাই না।

 

এ বিষয়ে দামুড়হুদা ব্রাক মোড় বেগোপাড়ার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মাইন বিস্ফোরণে তার বাঁচার কথা ছিল না। মহান রাব্বুল আলামীন তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। তিনি খুবই অসহায় মানুষ, খুব কষ্ট করে সংসার চালায়।মাইন বিস্ফোরণে তার একটি পা উড়ে যায়, বেঁচে আছে পঙ্গুত্ব বরণ করে। তার স্ত্রী খুবই অসুস্থ। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল আর রাজশাহী হাসপাতাল করতে করতে এখন একদম নিঃস্ব হয়ে গেছেন। সরকারি সুযোগ সুবিধা তার পাওয়া উচিৎ।

 

এলাকাবাসী ও পরিবারের দাবি, বর্তমানে অসহায় জীবন যাপন করছেন শুকুর আলী। তাই এই শোকের মাসে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মাইন বিস্ফোরণে আহত শুকুর আলীর বয়স্ক ভাতার কার্ডসহ প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা যেন পাই। সেজন্য তারা দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা বেগম বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। তিনি যদি আমার কাছে লিখিত কোনো আবেদন করেন খোঁজ খবর নেয়া হবে। যদি ঘটনা সত্য হয় তাহলে সরকারিভাবে সহযোগিতা করার সবরকম চেষ্টা করা হবে।

 

(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/এআর)