দুদকে জমা পড়া অভিযোগ মিথ্যা-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বলছেন বাপেক্স এমডি

প্রকাশ | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২:১৬ | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আলীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুদকে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। একে মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন তিনি।

বাপেক্স এমডি বলেন, একটি প্রতারক চক্র শুধু অভিযোগ দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি। নামে বেনামে কিছু ভূঁইফোড় অনলাইনে আমাকে নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, অভিযোগে যেসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট।

অভিযোগপত্রটির একটি কপি ঢাকাটাইমসের হাতে এসেছে। এতে দেওয়া মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পেয়েছে ঢাকাটাইমসের প্রতিবেদক।

অভিযোগে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ আলী থাকাকালীন সময়ে চার হাজার কোটি টাকার লোকসানি বোঝায় জর্জরিত বাপেক্স কোম্পানি।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বভার গ্রহণ করি ২০২০ সালের মে মাসে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে ১৯৮৯-২০১৮ ও ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পযর্ন্ত বাপেক্সের গ্যাস উন্নয়ন তহবিল ঋণ ছিলো চার হাজার কোটি টাকা।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, একক সিদ্ধান্তে পদোন্নতি বাণিজ্য চলে। এ বিষয়ে তিনি বলেস, বাপেক্স একক সিদ্ধান্তে বিশ্বাসী নয়। তাই যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যৌথভাবে। আরেক অভিযোগে বলা হয়, গত ২০২১ সালের ১০ই অক্টোবর বাপেক্সের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে মোহাম্মদ আলীর হাত আছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মো. আলী বলেন, বাপেক্স মূল্যায়ন কমিটির সভার মাধ্যমে দক্ষতা অভিজ্ঞতার যাচাই করেই পদোন্নতি দেওয়া হয়। এখানে বাণিজ্য করার সুযোগ নেই।

অভিযোগপত্রে নিয়োগ নিয়ে যেসব অনিয়মের কথা বলা হচ্ছে সেগুলো তার আমলে হয়নি বলে জানান তিনি। বলেন, যোগদানের পর অল্প কিছু কর্মচারীকে অস্থায়ী থেকে স্থায়ী করা হয়েছে। তাও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, মোহাম্মদ আলী টঙ্গী বোর্ডবাজার এলাকায় একটি বিলাস বহুল ছয়তলা বাড়িসহ রাজধানীতে অসংখ্য প্লট রয়েছে। এ বিষয়ে মো. আলী বলেন, আমার টঙ্গীর বাড়িটি পৈত্রিক বাড়ি। বংশীয়ভাবে অঢেল সম্পত্তির মালিক ছিলেন আমার বাবা। আমি ঢাকার খিলগাঁওয়ে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকি।

জানা গেছে, মোহাম্মদ আলী, এমএসসি, এমবিএ, এলএলবি, ডিগ্রি অর্জন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাধ্যমে গত ২০২০ সালের মে মাসে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেয়ার সময় সারাবিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারিতে আক্রান্ত ছিল।

দেশের জ্বালানি পরিস্থিতি বিবেচনায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতেও বাপেক্সের কার্যক্রম চলমান ছিল। এ সময়ে ৯৮ লাইন কি.মি. জিওলজিক্যাল সার্ভে, ৩৫০০ লাইন কি.মি. ২ডি সাইসমিক সার্ভে, ২টি অনুসন্ধানকূপ খনন, ১টি উন্নয়ন কূপ (সিলেট-৯), ৪টি ওয়ার্কওভার কূপ (শাহবাজপুর-৩, শ্রীকাইল-৪, ফেঞ্চুগঞ্জ-৪ ও তিতাস-৭ এবং ও ৪.৮ কিমি গ্যাস গ্যাদারিং পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় গ্রিডে ৮১.০০ এমএমসিএফ গ্যাস যুক্ত হয়েছে এবং গত ৮ মে ২০২১ তারিখে জকিগঞ্জ-১ কূপকে দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে আবিষ্কার করা হয়।

২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পেট্রোবাংলা সম্মাননা স্বারক প্রদান করে। বাপেক্সকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হতে লাভজনক প্রতিষ্ঠান উন্নীত করা হয়েছে।

আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানির মোট আয় ৪৮২.২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে কোম্পানির নিজস্ব গ্যাসক্ষেত্রসমূহ হতে উৎপাদিত গ্যাস ও কনডেনসেট বিক্রয় বাবদ (এসডি ও ভ্যাট ব্যতীত) ৩১৫.৪৬ কোটি টাকা এবং পিএসসি ব্লক-৯, সুদ প্রাপ্তি ও অন্যান্য খাতে ১৬৬.৭৬ কোটি টাকা আয় হয়।

মো. আলী আরও বলেন, বাপেক্সকে কারিগরি ও আর্থিক দিক থেকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ প্রদান, আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধকরণসহ সকল প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।

শিগগিরই কু-চক্রী মহলের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/০১সেপ্টেম্বর/এমএইচ/ইএস)