বিয়ের ১৯ দিনের মাথায় লাশ হলেন তাইরিন

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:১২ | প্রকাশিত : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৩৪

বিয়ের মাত্র ১৯ দিনের মাথায় লাশ হলেন চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কমলার দিঘি এলাকার গৃহবধূ জাহেদা আফরিন ওরফে তাইরিন। তিনি ওই এলাকার মো. ইসমাইলের স্ত্রী।

শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে বাবার বাড়ি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের শান্তিরহাট সাপলেজা পাড়ায় তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে শুক্রবার সকাল ৯টায় কমলার দিঘি এলাকায় স্বামীর বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তাইরিন সাপলেজা পাড়ার প্রবাসী মো. ইউসুফের মেয়ে। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাইরিন পোমরা জামেউল উলুম মাদ্রাসা থেকে ফাজিল (ডিগ্রি) শেষে রাঙ্গুনিয়া আলমশাহ পাড়া কামিল মাদ্রাসায় কামিল (এমএ) হাদিস বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন।

এদিকে তাইরিনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে জানিয়েছে। তবে এটি পরিকল্পিত হত্যা দাবি করেছে তাইরিনের পরিবার। তাকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

তাইরিনের ছোট ভাই মো. ইব্রাহিম বোনের স্বামী ইসমাইলকে অভিযুক্ত করে বলেন, ‘সে আমার বোনকে মেরে ফেলেছে। বাসররাতে আমার বোনকে অত্যাচার করেছে। ওই রাতেই সে শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরদিন সকালে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শরীরে তিনটি সেলাই করতে হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় আমার বোন কতটা কষ্টে ছিল।’

তাইরিনের বড় বোন রাশেদা আফরিন বলেন, ‘আমার বোনকে আমাদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতে দেয়নি। এমনকি আমাদের বাড়িতেও আসতে দেয়নি। আসার কথা বললে নানা অজুহাত দেখাত। আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি থাকলেও তাইরিনের স্বামী ইসমাইল একটিবারও যোগাযোগ করেনি। কেমন মানুষের সঙ্গে বোনকে বিয়ে দিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বাড়ি থেকে কেউ তাইরিনকে দেখলে গেলে বোনের সঙ্গে ওদের ঘরের কেউ একজন সঙ্গে সঙ্গে থাকত। একা একটু কথা বলবে সে সুযোগ দিত না। বোনের স্বামী নেশাগ্রস্ত, মাতাল ছিল।’

এদিকে তাইরিনের স্বামী মো. ইসমাইল বলেন, ‘আমার যা বলার রাউজান থানা-পুলিশকে বলেছি। ঘটনার দিনও বলেছি, আর কয়বার বলব? তাইরিন ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কেন আত্মহত্যা করেছে, সেটি জানি না। আমাদের সঙ্গে কোনো কিছু হয়নি।’

তাইরিনের ফুফাতো ভাই মো. ফয়সাল বলেন, ‘তাইরিনের বাবা বিদেশ থেকে রাতে দেশে এলে তাকে দাফন করা হয়।’

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে গৃহবধূ তাইরিনকে বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কমলার দিঘি এলাকার গণীর বাড়ির মো. ইসমাইলের সঙ্গে জাহেদা আফরিনের বিয়ে হয়। নিহতের শাশুড়ি ৪০ দিন আগে মারা যান। বিয়ের পর বাপের বাড়ি যাওয়া নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে জাহেদা আফরিনকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ইসমাইলের পরিবার।

(ঢাকাটাইমস/০৪সেপ্টেম্বর/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :