নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

স্বর্ণালংকার লুটের পরিমাণ প্রকাশ করলে সন্ত্রাসীরা আরও উৎসাহী হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:৪২ | প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:১২

বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) এর স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক দোলন বলেছেন, স্বর্ণালংকার লুটের পরিমাণ প্রকাশ করলে সন্ত্রাসীরা আরও উৎসাহিত হবে। তারা হামলা-লুট করার জন্য আরো বেশি প্রস্তুতি নিবে।

বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে সারাদেশে জুয়েলারি শিল্পের নিরাপত্তার দাবিতে বাজুস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়।

এনামুল হক দোলন বলেন, সন্ত্রাসীরা ক্যাশ টাকা লুট করার চেয়ে স্বর্ণালংকার লুট করতে বেশি পছন্দ করে। কারণ অল্প স্বর্ণ বিক্রি করে বেশি টাকা পাওয়া যায়। স্বর্ণ সহজে পরিবহনযোগ্য। হামলাকারী ও সন্ত্রাসীদের মূল টার্গেট স্বর্ণ লুট করা।

তিনি বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে এযাবৎ দেশে ২০ জন জুয়েলারি ব্যবসায়ী খুন ও অগণিত ব্যবসায়ী, মালিক-কর্মচারী হামলার শিকার ও পঙ্গু হয়ে জীবনযাপন করছেন। অতীতে চুরি-ডাকাতি ছিল ভয়াবহ আকারে, তবে এখন কিছুটা কমেছে।

জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের বিমা বিষয়ে দোলন বলেন, দেশের সকল জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে বিমার আওতায় আনা হবে। জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনে দেশের প্রায় ৪০ হাজার রেজিট্রেশনভুক্ত জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের নিয়ে আমাদের মহাপরিকল্পনা রয়েছে। অবশ্যই তাদের বিমার আওতায় আনা হবে। যদিও বিমা একটি ব্যয়বহুল ব্যাপার। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের আয় সীমিত। তারা অল্প সম্পদের মালিক। তারা আর্থিক সমস্যার মধ্যে আছে। তাদেরকে আমরা অবশ্যই ইনস্যুরেন্সের আওতায় আনব।

তিনি বলেন, আমরা সব সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালামাল রক্ষা করতে নিরুৎসাহিত করি। কারণ মালের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক। মাল রক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায় মাল ও জীবন দুটাই হারাচ্ছে। প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে মালামাল হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক মানুষ সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) এর স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জুয়েলারি দোকানে চুরি ও প্রকাশ্যে ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১ আগস্ট গভীর রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কলাতিয়া বাজারের মন্দির মার্কেটের কাঁকন জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের দল দোকান থেকে প্রায় ১৫০ ভরি স্বর্ণের ও দুই কেজি রূপার গহনা চুরি করে নিয়ে যায়।

২০২২ সালের ২৯ জুলাই রাজধানী ঢাকার মিরপুরের রূপনগরে রজনীগন্ধা মার্কেটে দিন দুপুরে নিউ বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের দল দোকান থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ ও ৫০ ভরি রূপা চুরি করে নিয়ে যায়।

২০ জুলাই ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলাধীন প্রদীপ জুয়েলার্সে প্রকাশ্যে ককটেল ফাটিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতদল দোকান থেকে প্রায় ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এসময় ডাকাতের গুলিতে দোকান মালিক অধীর কর্মকার গুরুতর আহত হন।

৬ জুন ময়মনসিংহের ট্রাংক পট্টিতে বর্ষা জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

২৪ এপ্রিল রাতে রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ কালীমন্দির মার্কেটে মা গোল্ড হাউজ-এ দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে সবুজবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানী ঢাকার কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারস্থ রাঙ্গাপরি-এ দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ভাষানটেক থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়া ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ, কালীবাজারস্থ কার্তিক জুয়েলার্সে দুর্ধর্ষ চুরি সংঘটিত হয়। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ মডেল থানায় চুরির মামলা দায়ের করা হয়।

১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনা মডেল থানাধীন কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি শপিং কমপ্লেক্সের মোহনা জুয়েলার্স ও বেস্ট এন্ড বেস্ট গোল্ড ক্রিয়েশন জুয়েল এভিনিউ প্রতিষ্ঠানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে রমনা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

সর্বশেষ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বাজুস সদস্য ধীমান ধরকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও শোক প্রকাশ করছি। আমরা ঘটনাগুলো দ্রুততার সাথে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনা এবং চুরিকৃত স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা উদ্ধারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সারা দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন মনিটরিং ডিস্ট্রিক অরগানাইজেশনের ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাজুসের সহ-সভাপতি ও চেয়ারম্যান, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ব্যাকিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের গুলজার আহমেদ, বাজুসের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. রিপনুল হাসান, জয়দেব সাহা, ইকবাল উদ্দিন, বিপুল ঘোষ শংকর, স্বপন চন্দ্র কর্মকার, বিকাশ ঘোষ ও বাবুল রহমান।

(ঢাকাটাইমস/৮সেপ্টেম্বর/এসকেএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

সংরক্ষিত আসনের এমপিদের মধ্যেও সংখ্যায় এগিয়ে ব্যবসায়ীরা: সুজন

মানবাধিকার ও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা জরুরি: ড. কামাল উদ্দিন

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রেলকে গড়ে তুলতে হবে: রেলমন্ত্রী

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে

বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :