চুয়াডাঙ্গায় স্বপ্নে দেখা টিউবওয়েলের পানিতে ভালো হচ্ছে সর্বরোগ! কী বলছেন কর্তৃপক্ষ?

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:১৯

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা

টিউবওয়েলের পানি পান করলেই ভালো হচ্ছে সর্বরোগ। আধুনিক এ বিজ্ঞানের যুগে কুসংস্কারকে বিশ্বাস করে দূর-দূরান্ত থেকে সব বয়সের নারীরা ছুটে যাচ্ছেন আলমডাঙ্গা উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামের পায়রা খাতুনের বাড়িতে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগে টিউবওয়েলের পানি পান করলেই রোগ মুক্তির বিশ্বাস জন্ম নিয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

 

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়েনের পোলতাডাঙ্গা গ্রামের ইকরামুল জোয়ার্দ্দারের স্ত্রী পায়রা খাতুন সর্ব রোগ ভালো হওয়ার জন্য নিজ বাড়ির টিউবওয়েলের পানি দিচ্ছেন নারীদের। পায়রা খাতুন বেশ কয়েক বছর আগে অসুস্থ হলে ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়েও সুস্থ হতে পারেননি। আবার তিন বছর আগে অসুস্থ হলে মাথার চুলে জট বাঁধে। তার শরীরে জিন ভর করায় স্বপ্নে নিয়মিত দেখায় টিউবওয়েলের পানি মানুষের দেওয়ার জন্য।

৯ মাস আগে তিনি প্রথম পানি সরবরাহ শুরু করেন প্রতিবেশীদের মাঝে।

 

পায়রা খাতুন জানান, সপ্তাহের সোমবার ও শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধু নারীদের দেওয়া হয় পানি। নিয়ত করে পানি নিয়ে খেলেই ভালো হচ্ছে সব ধরনের রোগ। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে বোতল ও অন্য পাত্রে করে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য পানি নিচ্ছেন নারীরা। এ বিশ্বাস থেকেই পানি নিতে আসছে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, রাজশাহী, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ।

আগত রোগীরা বলছেন, বিশ্বাস নিয়ে যারা পানি খাচ্ছেন, তারা উপকার পাচ্ছেন। এজন্য তাদের কোনো টাকা-পয়সা দিতে হচ্ছে না। কেউ বকশিস দিলে তা নিচ্ছেন পায়রা বেগম।

অনেকেই বলছেন, টাকা চাইলে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি বকশিস বাণিজ্য চালু রেখেছেন। চাল-ডাল থেকে শুরু করে অনেক উপঢৌকন দিয়ে থাকেন আগত রোগীরা। তার পরিমাণও কম নয়। 

 

বকশিসের পরিমাণ কেমন জানতে চাইলে আগত রোগীরা বলেন, আমাদের কাছ থেকে কোন টাকা-পয়সা নেওয়া হয় না। আমরা কেউ ১০০ টাকা, ৫০ টাকা করে বকশিস দিয়ে থাকি।

 

হিসাব করে দেখা গেছে, সপ্তাহে ২দিন ৩ হাজার নারীর মাঝে পানি সরবরাহ করা হয়। জনপ্রতি ৩০ টাকা করে বকশিস ধরলেও মাসে লাখ টাকা ছড়িয়ে যায়।

 

এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পায়রা খাতুনের স্বামী ইকরামুল জোয়ার্দ্দার আগে কর্ম করলেও বর্তমানে কিছুই করেন না। তাহলে তাদের সংসার চলে কিভাবে। প্রশ্ন করলে তিনি হাসতে হাসতে বলেন, সব মালিকের  ইচ্ছাতেই চলছে।

 

চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, স্বপ্ন দেখে মানুষকে পানি খাইয়ে রোগ সারানোর বৈজ্ঞানিক কোনো যুক্তি নেই। ঘটনা স্থলে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দেখব। প্রয়োজনে বন্ধ করে দেয়া হবে।

 

 

(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এআর)