পাকিস্তানি তরুণী ২২ বছর পর পেলেন বাংলাদেশি বাবার পরিবারের খোঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:০৩ | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৪১

পাকিস্তানি তরুণী তাহরিম রিদাও। জন্ম এবং বেড়ে ওঠা সেখানেই। তবে তার বাবা বাংলাদেশি। কিন্তু জন্মের পর বাবাকে সেভাবে কাছে পাননি। আর পাবেনও না। কারণ, তাহরিমের বাবা আর বেঁচে নেই। মারা গেছেন ১৮ বছর আগে। তবুও প্রযুক্তির সাহায্যে দীর্ঘ ২২ বছর পর তাহরিম খুঁজে বের করলেন বাংলাদেশে থাকা তার বাবার পরিবারকে।

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার মুহাম্মদ কাসিম আজাদ ১৯৮৭ সালে পাড়ি জমিয়েছিলেন পাকিস্তানে। সেখানে গিয়ে মেহবুবা নামে স্থানীয় এক নারীকে বিয়ে করেন। সে সংসারেই জন্ম হয়েছিল এই তাহরিমের। মেয়ের জন্মের পর ২২ বছর আগে দেশে ফিরে আসেন কাসিম। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ ছিল না। দেশে ফিরে কাসিম মারা যান ২০০৪ সালে।

তাহরিম শুধু জানতেন তার বাবার নাম এবং ফেনী জেলায় তাদের বাড়ি। অবশেষে দীর্ঘ ২২ বছর পর বাংলাদেশে বাবা কাসিমের পরিবারের সন্ধান পেয়েছেন তিনি। পাকিস্তানে বসেই ফেনীর একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে সন্ধান পেয়েছেন তার বাবার পরিবারের।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৫৭ মিনিটে তার ব্যক্তিগত আইডি থেকে তাহরিম ‘আমাদের ফেনী’ নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে স্ট্যাটাস দেন। সেখানে লেখেন, ‘আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। আমি এখানে আমার বাবার পরিবার খুঁজতে এসেছি। আমার বাবা ১৯৮৭ সালে পাকিস্তান এসে আমার মাকে বিয়ে করেছিলেন। ২০০৪ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের ফেনী থেকে এসেছিলেন। তার নাম ছিল মুহাম্মদ কাসিম আজাদ। আমার দাদার নাম তফাজুল হক। যিনি সম্ভবত আমার পিতার শৈশবে মারা গেছেন।’

আরও লেখেন, ‘আমি আমার বাবার পরিবার সম্পর্কে খুব বেশি বা প্রায় কিছুই জানি না। গ্রুপে নিজ চাচার একটি ছবি দিয়ে তিনি বলেন আবু সাদিক আমার বাবার বড় ভাই। যদি কেউ এই পরিবার সম্পর্কে কিছু জানেন তবে আমাকে জানাবেন। আমি তাদেরকে কখনও দেখিনি।’

কলেজে বা বাইরে গেলে তার বাবার পরিচয় জানতে অনেকেই বিরক্ত করে। পিতৃপরিচয় না থাকায় অবহেলিত হতে হয়েছে জন্মের পর থেকেই। বাবা কাসিম পাকিস্তান থাকাকালীন তার মাকে বিয়ে করেন। পাকিস্তানে তার মাকে রেখে দেশে গেলে অসুস্থ হয়ে মারা যান। এরপর তার পরিবারের সঙ্গে আর পরিচয় হয়নি।

পোস্ট দেওয়ার ২৩ মিনিটের মধ্যে তাহরিমের বাবার পরিবারের সন্ধান মেলে। জানা যায়, তার বাবার বাড়ি দাগনভূঞার ফাজিলের ঘাটে। পোস্ট দেওয়ার ২৩ মিনিটের মধ্যেই তার ফুফু ও ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়।

‘আমাদের ফেনী’ পেজের অ্যাডমিন ইমদাদুল হক বলেন, ‘তাহরিমের বাবা দেশে এসে তার মাকে চিঠি পাঠাতো। চিঠিতে উল্লেখিত ঠিকানা সংগ্রহ করে তাহরিম ফেনী নামক শব্দটি পায়। পরে ফেনী গুগলে সার্চ করে জানতে পারে এটি একটি জেলা। পরে ফেনী সার্চ করে আমাদের ফেনী নামক গ্রুপটি পায়। এরপর যাবতীয় ডিটেইলসসহ ফেসবুকে ইংরেজিতে পোস্ট করেন। এরপর ট্রান্সলেশন করে বাংলায় পোস্ট দেন অ্যাডমিন প্যানেল।’

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাহরিমের বাবার পরিবারের কাছে বার্তা পৌঁছে যায়। বর্তমানে তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন হয়েছে।

পিতৃপরিচয় পেয়ে তাহরিম বলেন, ‘ফেনীর মানুষকে কী বলে ধন্যবাদ দেব তা বলার ভাষা আমার নেই। আমাকে যারা খুঁজে পেতে সহায়তা করেছে সবাইকে আল্লাহ নেক হায়াত দান করুক। খুব শিগগির আপনাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।’

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/এএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :