চাঁদপুরে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে দুই বাড়ির মানুষ
দুটি বাড়িতে বাস করেন অন্তত ২৪জন মানুষ। তাদের বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা এতই সরু যে, একজন মানুষ পায়ে হেঁটে স্লাবের ওপর দিয়ে কোনো রকমে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেন। রিকশা নিয়ে বাড়িতে যাওয়া যায় না। অসুস্থ হলে কোনো চিকিৎসকও ওই বাড়িতে যেতে চান না। এমনকি ওই বাড়ির প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েও বিয়ে দিতে পারছেন না রাস্তা না থাকার কারণে।
এ চিত্র চাঁদপুর শহরের গুয়াখোলা কুন্ডবাড়ি মন্দির এলাকার পাশের বাড়িতে। এখানে দুটি বাড়ির ভাড়াটিয়াসহ ২৪ জন মানুষ সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। সরু চিকন ড্রেনের স্লাবের ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই তাদের।
স্থানীয়রা বলছেন, নিরীহ দুটি পরিবারের চলাচলের জন্য রাস্তা কাগজপত্রে লেখা থাকলেও বাস্তবে তা ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না প্রতিবেশী প্রভাবশালী লোকেরা।
এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানিয়েছেন দুই পরিবারের লোকজন।
সম্প্রতি ওই এলাকায় সরেজমিন গিয়ে কথা বলে জানা গেছে, কুন্ডু বাড়ির মন্দিরের উত্তর পাশে ড্রেনের ওপর দিয়ে ওই দুটি পরিবারের লোকজন ভাড়াটিয়াসহ ২৪ জন মানুষের চলারচলে সুব্যবস্থা নেই।
পরিবার দুটি হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম বেপারী ও হাজী আবদুল মতিন গাজীর পরিবার।
আবদুর রহিম বেপারী গুয়াখোলার বাসিন্দা জয়নাল আবদিনের কাছ থেকে ১৯৯৭ সালে সম্পত্তি ক্রয় করে বসবাসের জন্য বাড়ি তৈরি করেন এবং হাজী আবদুল মতিন ১৯৯১ সালে একই এলাকার বাসিন্দা শ্রী সম্ভু নাথ সরকারের কাছ থেকে সম্পত্তি ক্রয় করে পাশাপাশি দুটি পরিবার বসবাস করে আসছেন। তাদের উভয়ের দলিলে ইজমালি চলাচলের রাস্তার কথা খরিদকুত দলিলের চৌহদ্দিতে উল্লেখ থাকলেও বর্তমান চিত্র উল্টো। ওই এলাকার প্রত্যেক পরিবারের চলাচলের রাস্তা থাকলেও এই দুই পরিবার এখন কোণঠাসা (তারা যেন এখানে সংখ্যালঘু) হয়ে রয়েছে। তাদের দুই পরিবারের বাড়ির সামনে সরু রাস্তা, কিন্তু রাস্তার পশ্চিমে একজনের বসতঘর এবং পূর্বে দেয়াল দিয়ে আরেকজন বন্ধ করে রেখেছেন। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিম ঘর কিছুটা পাশ দিয়ে ভেঙে রাস্তা দেওয়া অথবা পূর্বের দেওয়াল অপসারণ করে চলাচলের সুযোগ করে দেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
আবদুর রহিম বেপারীর ছেলে মো. অহিদুর রহমান বলেন, আমরা যখন এখানে বসবাস শুরু করি তখন চলাচলের রাস্তা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে প্রভাবশালী লোকজন আমাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমি নিজে কর্মসংস্থানের কারণে ঢাকায় থাকি। বাসায় আমার মা, ছোট বোন, দুই ভাই ও তাদের স্ত্রী সন্তানরা থাকেন। আমাদের পাশে আরেক পরিবারও থাকে। আমাদের এই দুই পরিবার কিভাবে থাকি তা বাস্তবে কেউ এসে না দেখলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমার মা কিছুদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু রাতের বেলায় ড্রেনের ওপর দিয়ে চিকিৎসক যাওয়ার জন্য রাজি হননি। আমার বোন বিয়ে দেওয়ার সময় হয়েছে। রাস্তা না থাকায় বিয়েও দিতে পারছ না।
অহিদুর রহমান আরো বলেন, বহু বছর এই এলাকায় আমরা সব ধর্মের লোকজন অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে বসবাস করে আসছি। আমি শুধু আমাদের ন্যূনতম চলাচলের রাস্তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র, স্থানীয় কাউন্সিলর ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি আশা করছি।
(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/এআর/এসএ)