দুদকের মামলায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা শহীদের তিন বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:৫৩ | আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:৩১

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দুদকের একটি মামলায় সাবেক সেনাকর্মকর্তা মো. শহিদ উদ্দিন খানের তিন বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার ৯ নম্বর  বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাজিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে একই সঙ্গে আদালত আসামির ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দণ্ডিত আসামি পলাতক রয়েছেন। রায় ঘোষণার পর আদালত আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

মামলাটি দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর রফিকুল হক বেনু পরিচালনা করেন। দুদকের আরেক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, আদালত মামলাটি মাত্র চার কার্যদিবসে বিচার শেষ করে রায় দিয়েছেন। মামলাটিতে আদালত গত ৮ আগস্ট চার্জগঠনের পর গত ২৩ আগস্ট এবং ৭ সেপ্টেম্বর ২ কার্যদিবসে ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এরপর মঙ্গলবার যুক্তিতর্কের পর রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় সাবেক সেনাকর্মকর্তা শহীদ উদ্দিন খান, তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম খানসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত। এরপর একই বছর ২০ ডিসেম্বর আয়কর ফাঁকির মামলায় কর্ণেল (অব.) শহীদ উদ্দিন খানের নয় বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত।

দুদকের মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি মো. শহিদ উদ্দিন খান ১৯৮৩ সালে সেনাবাহিনীতে অষ্টম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১০ সালে কর্ণেল পদ থেকে অবসর নেন। তিনি ১৯৮৯ সালে মোসাম্মৎ ফারজানা আঞ্জুমকে বিয়ে করেন। তার শেহতাজ মানসী খান ও ফারিসা পিনহাজ খান নামে দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে।

অভিযোগ অনুসন্ধানে জানা যায়, শহিদ উদ্দিন স্ত্রী-সন্তানসহ যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। রাজধানীর বারিধারা তার পরিবারের সদস্যদের নামে একটি ফ্ল্যাট এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে দুটি বাড়ি আছে, যার মূল্য কম-বেশি মোট ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তাছাড়া তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যদের নামে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন ব্যাংকে ১২টি একাউন্ট রয়েছে। স্ত্রী-কন্যার নামে ঢাকাস্থ প্রচ্ছায়া লি. নামীয় ব্যবসায়েক প্রতিষ্ঠানে প্রতি শেয়ার ১০০/-হিসাবে ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৫ লক্ষ শেয়ার এবং কুমিল্লায় কোটি টাকা মূল্যের বন্দীশাহী কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। লন্ডনেও তাদের নামে জুমানা ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড প্রোপার্টিজ লিমিটেড নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং সাইপ্রাসেও ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে।

শহীদের সহোদর ভাই মোহাম্মাদ আলী খানের নামে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ব্যাংকে ৩০ লাখ ৩৯ হাজার দিরহাম জমা ছিল, যা  জুমানা ইনভেষ্টমেন্টস অ্যান্ড প্রোপার্টিজ লি. নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তরিত হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে জানা যায়, শহিদ উদ্দিন খানের নিজ নামে বা তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে কম-বেশি ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করাসহ বিদেশে তাদের নামে ১২টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে, যা একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে অস্বাভাবিক। অর্থাৎ তার/পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ কারণে তাকে ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ ইস্যু করা হয়। কিন্তু আসামি সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ মামলাটি করেন। মামলায় একই কর্মকর্তা তদন্ত করে গত বছর ১৪ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/কেএম)