বাধার মুখে শেষ হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জে মনোনয়নপত্র দাখিল

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২:০১

বাধার মুখে শেষ হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নত্র দাখিল। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী রুহুল আমিন এককভাবে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেও কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি।

এদিকে, তবে ১নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের দুই সদস্য প্রার্থী আব্দুল হাকিম ও আব্দুল জলিলের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় আব্দুল হাকিমের সমর্থক রবিউল ইসলাম ও মারুফ মণ্ডল নামে দুজনকে মারধর করেন আব্দুল জলিলের সমর্থকরা।

রবিউল ইসলাম জানান, আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী রুহুল আমিনের সাথে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে নির্বাচন অফিসে গেলে আব্দুল জলিল ও পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানের সমর্থকরা আমাকে মারধর করে। এই মারধরের কারণ আমার বড় ভাই আব্দুল হাকিম জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী এবং মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তিনি আরও বলেন, আব্দুল জলিল, পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানের পিএস এবং আমার বড় ভাই জলিলের প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ায় এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

এছাড়া চেয়ারম্যান পদে কেউ যাতে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচন অফিস দখল করে রাখে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্বাচন অফিসের গেটে দাঁড়িয়ে কাগজপত্র চেক করতে দেখা গেছে এবং বাইরে থেকে নির্বাচন অফিসের ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

তবে নির্বাচন অফিসে পুলিশ মোতায়ন থাকলেও এ ক্ষেত্রে নীরব ছিল পুলিশ প্রশাসন। এ সময় নির্বাচন অফিসে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়।

এ ধরনের বিশৃঙ্খল বিষয়ে পুলিশ প্রশাসন গণমাধ্যমের সামনে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।

এদিকে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী রুহুল আমিন জানান, কে নির্বাচন করবে আর কে করবে না এটি আমার দেখার বিষয় নয়।

তবে ভয় এবং নির্বাচন অফিস দখলের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

তবে মনোনয়নপত্র উত্তোলনকারী আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও দল থেকে বহিষ্কৃত নেতা সামিউল হক লিটন জানান, দলীয় নেতাদের ও মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিকবার অনুরোধে আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তা দাখিল করা থেকে বিরত থাকি।

তবে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল ওয়াহেদ জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও নির্বাচনী পরিবেশ না থাকায় এবং দল যেহেতু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না সেহেতু দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি অনুগত হয়ে এ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।

তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে কোন সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে না এবং ইভিএমের বিষয়ে জনগণের কোন আস্থা নাই। সেহেতু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।

তবে জেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোতাওয়াক্কিল রহমান তার কার্যালয়ে ছাত্রলীগের অবস্থান ও মনোনয়নপত্র জমাদানকারীদের তল্লাশি ও বাধার বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, এ বিষয়ে কোন প্রার্থী লিখিত বা মোখিক কোন অভিযোগ করেননি। আর অভিযোগ না করায় তিনি কোন ব্যবস্থাগ্রহণ করেননি। তাছাড়া একবার সাংবাদিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশকে বিষয়টি দেখার অনুরোধ করেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে চেয়ারম্যান পদে একজন, সাধারণ সদস্য পদে ২৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে চারজন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী রুহুল আমিন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও অন্যরা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে নির্বাচন অফিসে আসেননি।

প্রসঙ্গত, বুধবারও চেয়ারম্যান প্রার্থী দুরুল হোদা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে নির্বাচন অফিসে গেলে তার কাগজপত্র ছিনতাই করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ফলে জীবনের নিরাপত্তা শঙ্কায় তিনি বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেননি। আর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিনে সকাল থেকেই নির্বাচন অফিস দখলে নেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :