গ্রামীণ টেলিকমের দুর্নীতি অনুসন্ধান: জমি কেনাবেচার হিসাব চেয়েছে দুদক

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২৩:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

গ্রামীণ টেলিকমসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সব জমি ক্রয়-বিক্রয়ের যাবতীয় হিসাব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রবিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এসব নথিপত্র তলব করা হয়েছে। সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান সই করা চিঠিতে এসব নথিপত্র আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরবরাহ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। দুদক ও গ্রামীণ টেলিকম সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন কোন জায়গায় কত মূল্যে কি পরিমাণ জমি ক্রয় করা হয়েছে, যা পরে বিক্রি করা হয়েছে এবং নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ক্রয় করা জমিগুলো কীভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট ছকসহ দলিলের সত্যায়িত ফটোকপি। একইসঙ্গে জমি ক্রয়ের টাকা প্রতিষ্ঠানগুলো কোথা থেকে পেয়েছে ও জমি বিক্রির টাকা কোথায় কীভাবে রক্ষিত আছে। আর লাভ কোথায় কীভাবে খরচ করা হয়েছে তার বিবরণ। এছাড়া নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের নামে জমি হাতবদল হলে কিসের ভিত্তিতে হয়েছে। এসব জমিতে কোনো ভৌত অবকাঠামো নির্মিত হলে ওই অবকাঠামোর বিস্তারিত খরচের সব হিসাবসহ এ সংক্রান্ত অর্থ কোথা থেকে এসেছে, তার বিস্তারিত তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ ও কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালতের মাধ্যমে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক ইউনিয়নের তিন নেতা ও আইনজীবী ইউসুফ আলীসহ ৮ ব্যক্তির ১৯টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ করা হয়। হিসাবগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ টেলিকমের আইনজীবী ইউসুফ আলী, জাফরুল হাসান শরীফ ও ইউসুফ আলীর ল ফার্মের অ্যাকাউন্ট, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা কামরুজ্জামান, ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও মাইনুল ইসলামের ব্যাংক হিসাব।

দুদক জানায়, চলতি বছরের ২৮ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠালে কমিশন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। দুদক টিমে পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা এবং সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নূরে আলম সিদ্দিকী সহযোগী রাখা হয়।

ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/এসআর