ঝিনাইদহে মধুর অফুরন্ত জাদুতে ৩৪ বছর ধরে কাউন্সিলর

মো. শাহানুর আলম, ঝিনাইদহ
| আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:২৭ | প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:০৬

৩৪ বছর ধরে ঝিনাইদহ পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে আসছেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম মধু।

তিনি ১৯৮৮ সালে প্রথম এই ওয়ার্ডের কমিশনার নির্বাচিত হন। এরপর থেকে একের পর এক ছয়টি নির্বাচনেই সাইফুল ইসলাম মধু জয়লাভ করে আসছেন।

এভাবে ৩৪ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি হয়ে আছেন তিনি। গত ১১ সেপ্টেম্বরের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন সাইফুল ইসলাম।

তিনি পেয়েছেন দুই হাজার ২৮০ ভোট আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য পাঁচজন প্রার্থী সকলে মিলে ভোট পেয়েছেন দুই হাজার ৫৪৮টি।

সাইফুল ইসলাম মধু ক্লান্তিহীন একজন প্রতিনিধি, কারও সঙ্গে দেখা হলে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করেন। কেউ সমস্যার কথা জানালে সমাধানের চেষ্টা করেন। মহল্লার ড্রেন পরিষ্কার আছে কি না, সড়কের বিদ্যুতের বাতিগুলো জ্বলছে কি না, এসব নিয়মিত দেখভাল করেন তিনি।

এসব কারণে ঝিনাইদহ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররা সাইফুল ইসলাম মধু (৬০) কেই বারবার কাউন্সিলর নির্বাচিত করে আসছেন। ঝিনাইদহ শহরের সকল মানুষের কাছে তিনি মধু কমিশনার হিসেবে ব্যাপক পরিচিত।

তিনি যেকোনো সময় ওয়ার্ডবাসীর ডাকে সাড়া দেন। কারও ডাকে সাড়া মেলেনি এমনটা কখনো ঘটেনি বলে জানান ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

তারা বলেন, মধু কাউন্সিলর সবার কথা শোনেন। এলাকার সবাইকে সমানভাবে দেখেন।

এলাকাবাসী বলেন, প্রথম (১৯৮৮) যখন সাইফুল ইসলাম মধু কমিশনার নির্বাচিত হন, ‘তখন মধু ছিলেন একজন ১৯ বছরের যুবক। তাঁর কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হয়ে এলাকাবাসী তাঁকে বারবার প্রার্থী করেছে। তিনি একজন সৎ, যোগ্য ও কর্মঠ মানুষ হওয়ায় তিনি কখনো পরাজিত হননি। এখনো তিনি একই পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছেন বছরের পর বছর।

মৃত ব্যক্তির দাফন, হাসপাতালে রোগী নেওয়া, অসুস্থ ব্যক্তির নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন তিনি। সে কারণেই তিনি বারবার কমিশনার নির্বাচিত হচ্ছেন।

সাইফুল ইসলাম মধু সক্রিয় বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন তবে ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র মৈত্রীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে সরকারি দলের সাথেই মিলেমিশে নিজ উদ্যোগেই মানুষের জন্য কাজ করেণ। সাইফুল ইসলাম মধুর স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন, ছেলে রিফাত উল্লাহ (২৬) ও মেয়ে নিহা (১০) সকলেই তাঁর কাজে সহযোগিতা করে।’

ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়া এলাকার হাজী মতিয়ার রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম মধু ছয় ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে না পারায় আর পড়ালেখা হয়নি।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকেই মানুষের জন্য কাজ করার নেশা ছিল। কেউ বিপদে পড়লে পাশে দাঁড়াতেন। এভাবে কাজ করতে করতে একসময় এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। একারণে এলাকাবাসী তাঁকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে দেন। সেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে এলাকার মানুষের জন্য সাধ্যমতো সেবা করার চেষ্টা করেছেন। যার কারণে প্রতিবারই এলাকার মানুষ তাঁকে ভোট দিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত করছেন।

বাংলাদেশ পৌর কাউন্সিলর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সাইফুল ইসলাম। দীর্ঘ ৩৪ বছর জনপ্রতিনিধির দায়িত্বে থাকার পরও, ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ায় পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমিতে তাঁর একটি দোতলা বাড়ি আছে। তার কিছু অংশ ভাড়া দেওয়া। আর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কিছু জমি চাষ করে সংসার চলে। একটি বাইসাইকেল তার নিত্যদিনের সঙ্গী, সেটি নিয়ে তিনি এলাকায় ঘুরে বেড়ান।

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :