স্বপ্নসারথিদের জন্য আমরা জিততে চাই: সানজিদা

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:১৫ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:২৬

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সেমিফাইনালে ভুটানকে উড়িয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ নিতে চান লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্বকারী। বাঘিনীদের আত্মবিশ্বাসটা একটু বেশিই। দলীয় মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তারের কণ্ঠে তাই শোনা গেল।

গতকাল রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের অফিসিয়াল পেজে একটি পোস্ট করেছেন সানজিদা। মুহূর্তেই মধ্যেই সেটি ভাইরাল হয়। একই সঙ্গে প্রশংসায় ভাসতে থাকেন ২২ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার।

সানজিদা আক্তার লেখেন, ‘২য় বারের মতো সাফ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ। প্রথমবার ফাইনাল খেলেছি ২০১৬ সালে। সেবার ভারতের বিপক্ষে আমরা হেরে যাই। ৫ বার সাফের মঞ্চে এসে ১ বার রানার্সআপ, ৩ বার সেমিফাইনাল এবং ১ বার গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছি আমরা।

আলহামদুলিল্লাহ, আমরা এবার মাঠে দারুণ ছন্দে রয়েছি, ফাইনালে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। স্বাগতিক হিসেবে ফাইনাল খেলা কিংবা স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ফাইনাল খেলা সবসময় রোমাঞ্চকর। এছাড়াও এবারের ফাইনাল ম্যাচটি কিছুটা ভিন্ন। বহুদিন পর সাফ পাবে নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন দেশ। আর তাই এবার রোমাঞ্চকর একটি ফাইনাল ম্যাচ হতে যাচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ পুরুষ জাতীয় ফুটবল দলের হাত ধরে ২০০৩ সালে দক্ষিন এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছিলো বাংলাদেশ। এখনো আমরা সেই গল্প শুনি। বাংলাদেশ ফুটবলের বড় সাফল্যের মহাকাব্যে সেটি উজ্জ্বলতম অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এবার আমাদের জেতার সময় এসেছে। আমাদের দলের প্রতিটি সদস্য এটি জিততে মুখিয়ে আছে। ’

বাংলাদেশের মানুষের জন্য শিরোপা জেতার কথা বলে সানজিদা লেখেন, ‘যারা আমাদের এই স্বপ্নকে আলিঙ্গন করতে উৎসুক হয়ে আছেন, সেই সকল স্বপ্নসারথিদের জন্য এটি আমরা জিততে চাই। নিরঙ্কুশ সমর্থণের প্রতিদান আমরা দিতে চাই। ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনী কে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। আমাদের এই সাফল্য হয়তো আরো নতুন কিছু সাবিনা, কৃষ্ণা, মারিয়া পেতে সাহায্য করবে। অনুজদের বন্ধুর এই রাস্তাটুকু কিছু হলেও সহজ করে দিয়ে যেতে চাই।

পাহাড়ের কাছাকাছি স্থানে বাড়ি আমার। পাহাড়ি ভাইবোনদের লড়াকু মানসিকতা, গ্রাম বাংলার দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের হার না মানা জীবনের প্রতি পরত খুব কাছাকাছি থেকে দেখা আমার। ফাইনালে আমরা একজন ফুটবলারের চরিত্রে মাঠে লড়বো এমন নয়, এগারোজনের যোদ্ধাদল মাঠে থাকবে, যে দলের অনেকে এই পর্যন্ত এসেছে বাবাকে হারিয়ে, মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে, অনেকে পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে।

আমরা জীবনযুদ্ধেই লড়ে অভ্যস্ত। দক্ষণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়ে যাবো। জয় - পরাজয় আল্লাহর হাতে। তবে বিশ্বাস রাখুন, আমরা আমাদের চেষ্ঠায় কোনো ত্রুটি রাখবো না ইনশাআল্লাহ। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’

উল্লেখ্য, গ্রুপসেরা হয়েই সেমিফাইনালে উঠেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ফলে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে অন্য গ্রুপের রানারআপ দল ভুটানকে পায় সাবিনা খাতুনরা। সেরা চারের খেলায় ভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেন গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা।

(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/এমএম)