ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু

সিরাজুম সালেকীন, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:২১ | প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৪৫

এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। এতদিন বিচ্ছিন্নভাবে রাজধানীতে শনাক্ত হলেও এখন জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুরোগী। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুরোগী ভর্তির সংখ্যাও বেড়েছে। এবারের মৌসুমে অন্তত ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এদের বেশিরভাগই দক্ষিণের পর্যটন শহর কক্সবাজারের। তবে ঢাকা টাইমসের অনুসন্ধানের তথ্য বলছে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। গতকালই রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে মারা গেছেন দুইজন।

ডেঙ্গু জ্বর ২০১৯ সালে দেশজুড়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। বর্তমান পরিস্থিতি সেই দিকে যাচ্ছে কি না এই প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্যে জানানো হয়, গেল ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪৩৮ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এক দিনে সর্বোচ্চ রোগীর রেকর্ড। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশজুড়ে এক হাজার ৫৬০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

প্রতি বছর বর্ষাকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তিন বছর আগের সেই স্মৃতিই যেন মনে করাচ্ছে এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি। গত কয়েক দিন ধরে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছরের শুরু থেকে মোটামুটি নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় ছিল মশাবাহিত এই রোগটি। তবে বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে রোগটি। বছরের প্রথম পাঁচ মাস সংক্রমণের হার অত্যন্ত কম থাকলেও গত তিন মাসে তা আকাশ ছুঁয়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

ঢাকার বেশ কয়েকটি হাসপাতাল সরেজমিনে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে ঢাকাটাইমস। রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত শিশু হাসপাতালে চলতি মাসে ১২৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন। যার মধ্যে ৮৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়েন। চিকিৎসা নিচ্ছে ৪২ জন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়েও দুইজনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ঢাকার বাইরে থেকে কম রোগী আছে। বেশির ভাগ আসছে ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। বিশেষ করে মিরপুরের রোগী বেশি। আর ভর্তি রোগীদের ডেঙ্গু টেস্ট, বেড ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক মিলিয়ে গড়ে আড়াই হাজার টাকা করে খরচ হচ্ছে।

এদিকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। গেল সেপ্টেম্বরে ৬৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ২৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ২৬ জন চিকৎসা নিচ্ছেন। যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।

ঢাকা ও মুগদা হাসপাতালের পরিস্থিতি

রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নতুন ৪২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মাহমুদা আক্তার লিজা ঢাকা টাইমসকে জানান, মঙ্গলবার দুজন ডেঙ্গু রোগী মারা যান। অপরদিকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন ২২ জন। তবে মুগদায় দুজনের মৃত্যুর তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গত ২৪ ঘণ্টার প্রতিবেদনে আসেনি। এটি পরের ২৪ ঘণ্টার তথ্যে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার ভর্তি হয়েছেন ২৯ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩ জন। পুরোপুরি সুস্থ না হলেও পরিবারের অনুরোধে বাড়ি ফিরেছেন তিন জন। তবে ঢাকা মেডিকেলে ডেঙ্গুতে নতুন কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ময়নুল হক নামে রোগীর এক স্বজন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সোমবার ভর্তি করিয়েছি আমার ছোট ভাইকে। জ্বরে আক্রান্ত থাকা অবস্থায় নিয়ে এসেছি তাকে। হাসপাতালে পরীক্ষা করার পর জানা গেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে ভর্তি করিয়েছি হাসপাতালে। আমার ভাইকে হাসপাতালে না আনলে জানতামই না এতো বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে এখানে।’

মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। তকে গতকাল ৯৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গতকালই নতুন ভর্তি হয়েছেন ৪২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ২২ জন ডেঙ্গু রোগী। শিশু ডেঙ্গু আক্রান্ত আছে ১৮ জন।’

ওই পরিচালক আরও জানান, ‘মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্রমাগত বেড়েই চলছে ডেঙ্গু রোগী। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী ভর্তির হার বাড়ছেই। ঢাকার সব এলাকা থেকে আমাদের হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছে। রাজধানীর বাইরে থেকেও রোগীদের আগমন দেখার মতো। যেমন শরীয়তপুর, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লার রোগীরাও ভর্তি আছে আমাদের হাসপাতালে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘মূলত এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে। এ জন্য এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী বিভিন্ন আধারে, যেমন: কাপ, টব, টায়ার, ডাবের খোলস, গর্ত, ছাদ ইত্যাদিতে আটকে থাকা পানি অপসারণ করতে হবে।’ মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক বলেন, সিটি করপোরেশনের নজরদারি আরো বাড়ানো উচিত। প্রতিটি এলাকায় ডেঙ্গু নিধন কর্মসূচির দিকে একটু বেশি জোর দিতে হবে।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগী বাড়ছেই। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কমই রোগী আসছে। আমাদের হাসপাতালে ১২টি ইউনিট কাজ করছে ডেঙ্গু রোগী নিয়ে। মাঝে মধ্যে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গু একসঙ্গে আক্রান্ত হয়েও রোগী আসতে দেখা যায়। আমরা তখন দুটি রোগেরই একসঙ্গে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, ‘একমাস আগে রোগীর সংখ্যা যা ছিল, সে তুলনায় বর্তমানে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।’

এদিকে ঢাকার পরেই কক্সবাজারে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশি ভয়াবহ। জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গা শিবির থেকেই বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে আসছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ১৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিভিল সার্জন মাহবুবুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ডেঙ্গু সংক্রমণ কমাতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।’

এক দিনের চিত্র

দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এক দিনে নতুন করে ৪৩৮ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৩১৫ জন ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে ১২৩ জন। সব মিলে সারাদেশে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন ১৫৬০ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫০টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১১৯১ জন এবং অন্যান্য বিভাগে ভর্তি রয়েছেন ৩৬৯ জন। এছাড়া ১ জানুয়ারি থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২ হাজার ৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৯৩৮৩ জন আর ঢাকার বাইরে ২৬২৪ জন।

এ বছরের ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছাড়পত্র নিয়েছেন ১০৪০২ জন। যাদের বেশির ভাগ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আর এ বছরের মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। তবে সরকারি এই তথ্যের বাস্তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও রোগীর সংখ্যা আরও বেশি।

ডেঙ্গু রোগী এত দ্রুত বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে মশা গবেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার মঙ্গলবার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নতুন কোনো মশা না, ডেঙ্গুর প্রধান বাহক এডিস মশা। যেহেতু দেশের কয়েকটি জেলায় ডেঙ্গু প্যান্ডেমিক আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার থেকে ডেঙ্গু রোগ বহন করে মানুষ যখন অন্য জেলায় যায় সেখানেও ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা আছে। তখন নিজেদের মধ্যে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে যাচ্ছে, বর্তমানে এই ঘটনাটি ঘটছে।’

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে কবিরুল বাশার বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে একাধিক মিটিং হয়েছে। আর অধিদপ্তর তো মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকে না, তারা রোগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করেন।’

এই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি সিটি করপোরেশন, পৌরসভাকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা যদি চিরুনি অভিযান করে উড়ন্ত মশা ও লার্ভাকে মারা যায়, তাহলে ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আর কেউ যদি জ্বর নিয়ে হাসপাতাল বা বাড়িতে থাকেন তাদের অবশ্যই উচিত হবে মশারির নিচে থাকা। তাহলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কম হবে।

মশা নিধনে যে ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হয় সেগুলোর কার্যকারিতা কতটুকু জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, ‘মশা নিয়ন্ত্রণের যে কীটনাশক ব্যবহৃত হয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন যেটি ব্যবহার করে লার্ভিনটা ইফেকটিভ। আর যেটা ফ্রগিন করে সেটা মাঠ পর্যায়ে শতকরা ২৫-৩০ ভাগ কাজ করে।’

এই মুহুর্তে সিটি করপোরেশন বা পৌরসভাগুলোর করণীয় কী জানতে চাইলে অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘এখন অল্পকিছু হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি। তাদের ঠিকানা সংগ্রহ করা উচিত। তাহলে বোঝা যাবে ডেঙ্গুর হটস্পট বা আক্রান্ত সংখ্যা বেশি। এরপর চিহিৃত এলাকায় ক্রাস প্রোগ্রাম করে উড়ন্ত মশা এবং লার্ভাকে মেরে দিতে হবে।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ডেঙ্গু রোগীদের ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের খোঁজখবর রাখছি। পাশাপাশি তাদের বাড়ির আশপাশে মশা নিধনে ফ্রগিন করছি। আর যেসব এলাকা হটস্পট সেসব এলাকায় প্রতিনিয়ত ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। তাছাড়া আমরা প্রতিনিয়ত বাসা-বাড়ি, অফিস, নির্মাণাধীন বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছি। যেখানেই ডেঙ্গুর লার্ভা পাচ্ছি, সেখানেই জরিমানা করা হচ্ছে।’ সিটি কর্পোরেশন থেকে শুধু ওষুধ ছিটালে হবে না জানিয়ে ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘আমরা যেটা করছি তাতে ২৫-৩০ শতাংশ ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। যদি না সাধারণ মানুষ সতর্ক হন। বিশেষ করে বাড়ির আশপাশে পানি জমে থাকলে বা স্থাপনার ভেতরে-বাইরে আশপাশে কোথাও পানি জমে থাকলে এবং ফুলের টপের পানি ফেলে দিতে হবে।’

ডেঙ্গুর উপসর্গ ও চিকিৎসা:

ডেঙ্গু রোগটি মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং এর প্রথম উপসর্গ প্রবল কাঁপুনি দিয়ে জ্বর। এই রোগের সময় শরীরের প্লেটলেট সংখ্যা হ্রাস পায়। ডেঙ্গু এডিস নামক মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগ বর্ষাকালে প্রতি বছর ছড়িয়ে পড়ে এবং হাজার হাজার মানুষ এই রোগের শিকার হয়ে মারা যান।

চিকিৎসকরা বলেন, সাধারণত মানুষের শরীরের ১ মিলি লিটার রক্তে ৩০-৪০ হাজার প্লেটলেট থাকে। এই প্লেটলেট প্রতিদিন ধ্বংস হয় এবং তারা প্রতিদিন গঠিত হয়। ডেঙ্গু শরীরের কাজের গতিকে হ্রাস করে, যা প্লেটলেট তৈরির গতি কমিয়ে দেয়। এই ক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার উপর সরাসরি প্রভাব পড়ে। ডেঙ্গু রোগের বাহক মশা (এডিস মশা) বেশিরভাগ দিনের বেলায় কামড়ায় এবং পরিষ্কার জলে ছড়িয়ে পড়ে বংশ বিস্তার করে। ড্রাম, ট্যাঙ্ক এবং গামলায় সংগৃহীত পানিতে এরা ডিম পাড়ে এবং মশার বংশ বিস্তারের মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্যারাসিটামল ও পানিই ডেঙ্গুর আসল চিকিৎসা। কারণ ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন নেই। অন্য জ্বরের মতো প্যারাসিটামল দিয়ে ডেঙ্গু জ্বর নামিয়ে রাখতে হবে। জ্বর নামিয়ে ১০০ রাখলেই চলবে। ৯৭ করার দরকার নেই। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ ব্যবহার করা উচিত না। এনএসআইডি (ডাইক্লোফেনাক, ইন্ডোমেথাসিন) দ্রুত জ্বর নামিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে শকে নিতে পারে, কিডনির ক্ষতি করতে পারে। খাদ্যনালিতে রক্তক্ষরণ ত্বরান্বিত করে জীবনের ঝুঁকি ডেকে আনতে পারে।

তাছাড়া সাপোজিটরি নিলে শুধু প্যারাসিটামল, অন্য কিছু নয়। চার ডোজে ভাগ করে প্রতিবারে পাঁচশ’ মিলিগ্রাম প্যারাসিটামল খাওয়া উচিত তার পরেও ১০২-এর বেশি থাকলে একবারে তৎক্ষণাৎ এক হাজার মিলিগ্রাম প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে। তাছাড়া কয়েকদিন তিন লিটার পানি পান করতে হবে। প্রয়োজনে স্যালাইন নিতে পারলে ভালো হয়। জ্বরের সময় ক্ষুধামন্দা হয়, বমি লাগে। ফলের রস উপকারী পানি এবং অল্পতে বেশি ক্যালরি পাওয়া সম্ভব। স্বাভাবিক খাবার খেতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২১সেপ্টেম্বর/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ

কেন বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ

করোনায় ধূমপায়ীদের মৃত্যু হার ৩ গুণ বেশি: গবেষণা

বিদায়ী উপাচার্যের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রশ্নে যা বললেন ডা. দীন মোহাম্মদ

বিএসএমএমইউতে নতুন উপাচার্যকে বরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি  

অ্যানেস্থেসিয়ায় হ্যালোথেন ব্যবহার বন্ধ করতে বললো স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, কেন এ নির্দেশ?

হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় বাদাম!

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতালে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসে জানুন সংক্রামক এ রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত

মৃগী রোগ সম্পর্কে কতটা জানেন? এর লক্ষণ আর চিকিৎসাই বা কী?

এক যুগ আগেই জানা যাবে আপনি মূত্রাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত কি না

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :