তিন বছরের ‘দুদক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ একসঙ্গে দেওয়া হচ্ছে, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আহ্বান

প্রকাশ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:০৫ | আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৩:৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দুর্নীতি ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া ‘দুদক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’- আবার চালু হলো।  ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড এবার একসঙ্গে দেওয়া হবে। ২০১৯ সালের অ্যাওয়ার্ডের জন্য আগেই প্রতিবেদন আহ্বান করা হয়েছিল। তা প্রাথমিকভাবে বাছাইও করে রাখা হয়েছে। এর বাইরে ২০২০ ও ২০২১-এর জন্য অনুসন্ধানী ও সৃজনশীল প্রতিবেদন আহ্বান করা হয়েছে।

বুধবার দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে চারটি বিষয় বিবেচনা করা হবে। সেগুলো হলো-

১। যে সব প্রতিবেদন দুর্নীতি ও অপরাধ উদঘাটনের বিষয়ে কমিশনের অনুসন্ধান ও তদন্তে সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে।

২। দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে এমন সৃজনশীল বিজ্ঞাপন, টিভি কার্টুন, জিঙ্গেল ও টিভি প্রচারণা।

৩। নতুন উপায় উদ্ভাবনী প্রতিবেদন, যা দুর্নীতি বিস্তার রোধে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।

৪। প্রতিবেদনের মৌলিকতা, ভাষা, সমসাময়িক প্রাসঙ্গিকতা, উপস্থাপন কাঠামো এবং ছবি ও গ্রাফিক্সের সঠিক ব্যবহার।

প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নিয়ম

১। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রকাশিত বাংলা অথবা ইংরেজি দৈনিক সংবাদপত্র, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক সাময়িকী ও অনলাইনে এবং বাংলাদেশ বেতার ও অন্যান্য বেসরকারি বেতার, বিটিভি ও দেশীয় মালিকানাধীন বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোতে দুর্নীতি সংক্রান্ত ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক সৃজনশীল প্রতিবেদন প্রচার অথবা প্রকাশের পর প্রতিবেদককে নিজ নাম, যোগাযোগের ঠিকানা ও ফোন নম্বরসহ ডাকযোগে অথবা সরাসরি প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবেদনের চার কপি স্ক্রিপ্টসহ সিডি কমিশনের E-mail: [email protected] অথবা জনসংযোগ কর্মকর্তা, দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়-১, সেগুনবাগিচা ঢাকা-১০০০ ([email protected])- এর কাছে আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে অফিস সময়ে জমা দিতে হবে।

২। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রচারিত বা প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত প্রতিবেদন ‘দুদক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’-এর জন্য বিবেচিত হবে। তবে সিরিজ প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী বছরে কিছু অংশ প্রকাশিত বা প্রচারিত হলে সে অংশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

৩। খামের ওপর ‘দুদক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ এবং ‘দুদক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ উল্লেখ করতে হবে।

৪। বরাবরের মতো ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পুরস্কার আলাদাভাবে দেওয়া হবে। বিজয়ীর সংখ্যা কমানো বা বাড়ানোর ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে।

৫। সিরিজ প্রতিবেদন ছাড়া কোনো সাংবাদিকের একাধিক প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।

৬। প্রতিযোগীকে প্রতিবেদনের সঙ্গে এক কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং জীবন বৃত্তান্ত জমা দিতে হবে।

৭। প্রতিযোগীকে লিখিত অঙ্গীকার করতে হবে যে, তার পরিবারের কোনো সদস্যের নামে কোনো দুর্নীতির মামলা বা আইনগত প্রক্রিয়া চলমান নেই বা কখনো অভিযুক্ত হননি।

৮। পুরস্কার ও সম্মানী হিসেবে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিজয়ী যথাক্রমে ৫০, ৪০ ও ৩০ হাজার টাকা করে পাবেন। এছাড়া প্রত্যেককে দেওয়া হবে ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র।

৯। সাংবাদিকতা, গবেষণা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংশ্লিষ্ট শাখায় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও স্বনামধন্য তিন সদস্যের বিচারক প্যানেলের মাধ্যমে বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন- দুর্নীতি সংক্রান্ত অনুসন্ধানী ও সৃজনশীল সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০১৩ সাল থেকে ‘দুদক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ‘দুদক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২০ ও ২০২১’ দেওয়ার জন্য প্রতিবেদন আহ্বান করা হলো।

এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ২০১৯ সালের প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। প্রতিবেদক জমা হ‌ওয়ার পরপরই দেশে করোনা দেখা দিলে ওই বছরের অ্যাওয়ার্ড স্থগিত করা হয়। ফলে দুদক এবার তিন বছরের অ্যাওয়ার্ড একসঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জন্য তিন সদস্যের জুরিবোর্ড‌ও গঠন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের দুদক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স এগেইনস্ট করাপশন- RAC এর তৎকালীন সভাপতি মিজান মালিক কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের কাছে মিডিয়া এওয়ার্ড চালুর জন্য লিখিতভাবে প্রস্তাব করেন। কমিশনের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। এরপর ২০১২ সাল থেকে দুদক মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড দিয়ে আসছে সংস্থাটি।

(ঢাকাটাইমস/২১সেপ্টেম্বর/এএইচ)