সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে: রব

প্রকাশ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:০০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে হামলা করছে সরকার। সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা সমাজের সবার সঙ্গে মতবিনিময় করবো। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নির্দেশ ছাড়া হামলা করা যাবে না। তাহলে আগের হামলাগুলো নির্দেশ দিয়ে হয়েছে? পালাবার রাস্তা পাবেন না। যাদের আত্মীয় স্বজনকে মেরেছেন তারা ধরবে। আমরা বলে দিবো ধরার জন্য।’

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় রব এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের গণতন্ত্র জনগণের নয়, এ দেশের গণতন্ত্র রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্র মন্তব্য করে জেএসডি সভাপতি বলেন দেশের ৯৬ শতাংশ মানুষ রাজনীতি করে না। তারা শ্রমজীবী ও পেশাজীবী। আমরা এসব মানুষের মতামত নিতে এবং তাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ চাই।

জেএসডি সভাপতি বলেন, আমরা বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গে কথা বলে কমিশন গঠন করবো। আমরা কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দেবো না। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। যারা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হয়েছে। এই রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র নেই। এই রাষ্ট্র জনগণের রাষ্ট্র নয়। এই রাষ্ট্রের জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি।

আ স ম আবদুর রব বলেন, ডলার সংকটের সময়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইভিএম কিনছেন। নির্বাচন না হলে এই ইভিএম দিয়ে কী হবে। এই ডলারের টাকা কে দেবে। এই সরকার ও নির্বাচনের অধীনে তো নির্বাচন হবে না। জনগণ এই নির্বাচন মেনে নেবে না।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে জেএসডি সভাপতি বলেন, পাশের দেশের বক্তব্য হলো বাংলাদেশে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে নয়, রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক। এর মাধ্যমে সিগন্যাল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে শেখ হাসিনাকে আর ক্ষমতায় রাখা হবে না।

অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, আশির দশকের লড়াই একটা সম্ভাবনাময় লড়াই ছিল। সবার অংশগ্রহণে এরশাদ পতনের মধ্য দিয়ে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার কথা ছিল। কিন্তু এর পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসলেও দেশে পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় নাই।

তিনি বলেন, এরা এমন একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় যেখানে কোনো জবাবদিহি থাকবে না। তারা যা খুশি তাই করতে পারবে। যদি থাকতো রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র অনেক আগেই বাতিল হয়ে যেত। দেশে গণতন্ত্র নেই বলেই দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হচ্ছে। শিক্ষার্থী-তরুণ-কিশোরদের হাতে অস্ত্র দিয়ে এইটাই প্রমাণ করতে চাচ্ছে যে এটার মধ্য দিয়েই তাদের ভবিষ্যৎ। তরুণ-কিশোরদের আরেক অংশকে ভয়ের মধ্যে রেখেছে।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার না থাকায় কেউ তাদের দাবির কথা বলতে পারছে না। তরুণদের মধ্যে যেই ভয়াবহ ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তার অবসান ঘটানো দরকার। এই লড়াইয়ে তরুণরাও অংশগ্রহণ করবে।

মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২১সেপ্টেম্বর/কেএম)