১১ বছর পর চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার আশায় আত্মসমর্পণ, যেতে হলো কারাগারেই

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:৪১ | প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:১৩

চাঁদপুর জেলা পরিষদ চাঁদপুর এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর আপিল করা আর হলো না। আওয়ামী লীগ সমর্থিত জেলা পরিষদ চাঁদপুর এর প্রার্থী তার মনোনয়ন বাতিলকৃত বিষয়ে বুধবার আপিল করার কথা থাকলেও তিনি আর চমক দেখাতে পারলেন না। আপিলের সময়সীমা বুধবার শেষ হয়ে গেল।

চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী ইউসুফ গাজী চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।

প্রতারণা মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার ১১ বছর পলাতক থাকার পর মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) শেষ বিকালে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি খুলনা জেলা কারাগারে আছেন।

বুধবার খুলনা জেলা কারাগারের জেলার মো. তারিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, ৪২০ ধারার একটি মামলায় খুলনার অ্যাডিশনাল সিএমএম আদালত ইউসুফ গাজীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

ইউসুফ গাজী চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। তবে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন দেয় চাঁদপুরে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

গত রবিবাব (১৮ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান। রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী চাইলে মনোনয়নপত্র বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।

বুধবার(২১ সেপ্টোম্বর) আওয়ামীলীগ সমর্থিত জেলা পরিষদ চাঁদপুর এর প্রার্থী তার মনোনয়ন বাতিলকৃত বিষয়ে বুধবার আপিল করার কথা থাকলেও তিনি আর চমক দেখাতে পারলেন না। তিনি সাজা প্রাপ্ত পলাতক আসামী হিসেবে আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করেন। এদিকে আজ বুধবার আওয়ামীলীগ সমর্থিত জেলা পরিষদ চাঁদপুর এর প্রার্থী তার মনোনয়ন বাতিলকৃত বিষয়ে আপিল করার সময়সীমা শেষ হয়ে গেলো।

জানা যায়, প্রজাপতি মার্কার দিয়াশলাই ফ্যাক্টরিতে কাঠ সরবরাহের যৌথ ব্যবসার প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে খুলনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হুমায়ুন কবির নামে একজন খুলনার বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী মামলা করেন।

সেই মামলায় আদালত আসামিকে খালাসের রায় দিলেও ২০০৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খুলনা দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী হুমায়ুন কবির। আপিল শুনানি শেষে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

খুলনার আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, এ রায় তিনি গ্রেপ্তার তথা আত্মসমর্পণের তারিখ থেকে কার্যকর হইবে। সেই সঙ্গে আসামিকে ৩০ দিনের মধ্যে সাজা ভোগের জন্য খুলনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশও দেয় আদালত।

এরপর ওই দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ রুল জারি করে দন্ডাদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়। ২০১৭ সালে রিট পিটিশনটি পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে বিচারপতি মাইনুল হোসেন চৌধুরী এবং বিচারপতি জে বি এম হাসানের আদালত দন্ডাদেশের স্থগিতাদেশ বাতিল করে পাঁচ বছরের সাজা ও অর্থদন্ড বহাল রাখেন।

এরপর ইউসুফ গাজী উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ২০১৭ সালে একটি পিটিশন দায়ের করলেও আদালত দণ্ডাদেশ স্থগিত না করে ১০ সপ্তাহের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু পিটিশন দায়ের করার নির্দেশ দেন। অন্যথায় তা খারিজ হবে বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু ২০১৯ সালে তিনি লিভ টু আপিল করেন।

( ঢাকাটাইমস/২১সেপপ্টেম্বর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :