রেলিংবিহীন সেতু: ঝুঁকিতে পথচারী

দেবীদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:০৪ | প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৪:৩৫

কুমিল্লার দেবীদ্বারে গোমতী নদীর ওপরে নির্মিত খলিলপুর সেতুটির রেলিং না থাকায় সেতু পারাপারে ঝুঁকি বাড়ছে পথচারী ও যানবাহনের। স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিন্তিত শিক্ষক ও অভিভাবক মহল।

সরেজমিনে খলিলপুর সেতুটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, মাত্র ১৭ বছর আগে নির্মিত সেতুটির মাঝ বরাবর অধিকাংশ স্থান জুড়ে দুই পাশের রেলিং কোথাও আংশিক, কোথাও সম্পূর্ণ উধাও। রেলিংবিহীন ব্রিজের ফুটপাথ ধরে পারাপার হচ্ছে প্রাথমিক স্তরের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

তাদের পাশ কাটিয়ে দ্রুত ছুটে যাচ্ছে অটো, সিএনজি আর মালবাহী পিকআপ ভ্যান। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বুঝা গেল রেলিং না থাকার ঝুঁকি নিয়েই তারা প্রতিদিন সেতু পার হয়। সেতু থেকে পড়ে যাবার ভীতির কারণে অনেকেই স্কুলে বা মাদ্রাসায় একা আসতে চায় না।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০৫ সালে জোট সরকারের আমলে এ সেতুটি নির্মাণ হয়। নির্মাণকালে ত্রুটিপূর্ণ সেন্টারিংয়ের কারণে ১৩০ মিটার লম্বা সেতুটির মাঝের অংশ তখনই সামান্য দেবে যায়। সেই অবস্থায়ই ঠিকাদার নির্মাণ শেষ করে সেতুটি হস্তান্তর করে বিল উত্তোলন করে নিয়ে যায়। বিগত সাত-আট বছর যাবত রেলিংয়ের পলেস্তারা খসে পড়তে থাকে। বিগত ১৭ বছরে সেতুটির কোনো সংস্কার না হওয়ায় ধীরে ধীরে প্রায় অর্ধেক রেলিংই খসে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানি জানান, পলেস্তারা খসে পড়ার কারণে সহজেই খুলে নেওয়ার সুবিধা থাকায় স্থানীয় কিছ মাদকসেবী রাতের আঁধারে রেলিং খুলে নিয়ে রডগুলো ভাংগারির দোকানে বিক্রি করে দেয়।

গ্রামবাসী জানায়, তারা স্থানীয় এলজিইডি অফিসকে অবহিত করেছেন, কিন্তু কার্যত কোনো ফল হচ্ছে না। এখন এই সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচল করতে তাদের ভয় হয়। তারপর কোনো উপায় না পেয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন।

খলিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলম মুন্সী জানান, দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, একটি হাইস্কুল, দুইটি মাদ্রাসা ও একটি কলেজসহ ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় শিক্ষার্থীরা নিয়মিত সেতুটি পারাপার হয়। প্রাথমিক পর্যায়ের বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। রেলিং না থাকায় অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পান।

৬ নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেএম কামরুজ্জামান মাসুদ জানান, দেবিদ্বার উপজেলার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কিছু এলাকার সড়ক যোগাযোগের মাধ্যম এই সেতুটি। বালিবাড়ি, হামলাবাড়ি, বারেরারচর, খলিলপুর, আশানপুর, জয়পুর, কামারচর, হেতিমপুর, নূরপুর, বড়কান্দা ও বুড়িরপাড় সহ প্রায় পঁচিশটি গ্রামের অর্ধ লক্ষ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি নিয়মিত ব্যবহার করেন। অত্র এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটির রেলিং নির্মাণ ও সংস্কার অত্যন্ত জরুরি কিন্তু এলজিইডি অফিস কি কারণে সেতুটি সংস্কারে গড়িমসি করছেন, তা বোধগম্য নয়।

এ বিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. শাহালম বলেন, খলিলপুর সেতুটি সংস্কারের বিষয়ে প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। চলতি সপ্তায় সেতুটির সার্বিক অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনার জন্য আমরা জরুরি বৈঠকে বসব এবং প্রয়োজনে আবারও প্রস্তাবনা পাঠাবো। আশা করি খুব শিগগির এর কাজ শুরু করতে পারব।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :