ফের নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি: ব্যাগভর্তি বাজার যেন স্বপ্ন

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:০১ | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:১০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বছরজুড়ে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে হিমশিম মধ্যবিত্ত ক্রেতা সাধারণ। এরই মধ্যে সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে আবারও বেড়েছে বেশ কিছু নিত্যপণের দাম। আর এই ঊর্ধ্বগতি দামের ধারায় চিড়েচ্যাপটা হচ্ছে জনজীবন। ফলে ‍অসাধ্যের বাজারে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের ব্যাগভর্তি বাজার এখন অনেকটাই স্বপ্নের মতো। জনমনে প্রশ্ন কবে সুদিন ফিরবে? কবে ব্যাগভর্তি নিত্যপণ্য নিয়ে বাসায় ফিরবেন ক্রেতা?

রাজধানীর রিংরোডে বসবাসকারী আব্দুল মতিন। নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে এসেছেন শ্যামলীর সমবায় বাজারে। আগে সপ্তাহে একদিন এলেও বর্তমানে তিন থেকে চার দিন বাজারে আসা লাগে বলে জানান তিনি।

আব্দুল মতিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, আগে সবকিছুর দাম কম ছিল। তখন একদিন বাজারে এসে একবারে এক সপ্তাহের বাজার করে বাসাই ফিরতাম। কিন্তু এখন সবকিছুর যে দাম তাতে পকেট ভর্তি টাকা এনে খালি ব্যাগ হাতে বাসাই ফিরতে হয়। একটা কিছু কিনলে অন্য আরেকটা কিছু বাদ রাখতে হয়। সপ্তাহে তিন চার দিন বাজারে আসা লাগে। কোনো না কোনো পণ্য বাদ রেখে বাসায় ফিরতে হয়। এভাবে কতদিন জীবন চলতে পারে। কবে আবার সবকিছুর দাম কমবে? কবে বাজারের ব্যাগ ভর্তি করে আবার বাজার করতে পারবো। এমন মন্তব্য অন্যান্য ক্রেতাদেরও।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা মূল্যের বাজার ঘুরে আবারও নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির চিত্র দেখা গেছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে আলু কেজি প্রতি ৪০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১২০ টাকা, ভেন্ডি ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, মুখি কচু ৭০টাকা, কচুলতি ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি টুকরা ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৫০ টাকা, চিচিংগা ৭০ টাকা, ঝিংগা ৮০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, কাঁচকলার হালি ৩০ টাকা, শশা ৬০ টাকা, টমেটো কেজি প্রতি ১৪০ টাকা ও গাজর কেজি প্রতি ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁয়াজের কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ১২০ টাকা।

এক সবজি বিক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহ থেকে এই সপ্তাহ পর্যন্ত বেশ কিছু পণের দাম আবার নতুন করে বেড়েছে। গত সপ্তাহে লম্বা বেগুন ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। আর এখন ৬০ টাকা দরে আমাদের কিনেই আনতে হচ্ছে। পটল ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতাম। আর এখন পটল আমাদেরই কেনা ৫০ টাকা কেজি পরে যায়। সবজির দাম প্রচুর বেড়ে গেছে। ৭০- ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজিই নাই।

হাবিবুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, দিন দিন দেশ ডিজিটাল হচ্ছে, বড়লোকের সংখ্যা বাড়ছে, সঙ্গে সবকিছুর দামও বাড়ছে। আথচ আমাদের মতো সাধারণ জনগণের বিপদ বাড়ছে। না বাড়ছে বেতন, না হচ্ছে অল্প টাকায় বাজার। বাজারে এলেই কিছু না কিছু বাদ রেখে যেতে হচ্ছে। কারণ, টাকার স্বল্পতা।

চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে আটাশ চাল কেজি ৬০ টাকা, মিনিকেট ৭০ টাকা, গুটি শর্ণা ৫৫ টাকা, শর্ন ৫০ টাকা, নাজিরশাহ ৮০ টাকা কেজি। মোটা ডাল কেজি ১১০ টাকা, চিকন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ডিমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লাল ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে।  সাদা ডিমের হালি ৫৫ টাকা এবং হাসের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা দরে।

মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১৭০টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা কেজি এবং সোনালী মুরগি ৩২০ টাকা কেজি।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/কেআর/কেএম)