সরকারি পুরনো পাঠ্যবই বিক্রিতে পুকুর চুরি!

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৫৭

জাহাঙ্গীর হোসেন, মির্জাপুর

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় ৫৪০ কেজি পুরনো পাঠ্যবই বিক্রির অনুমতি নিয়ে অন্তত দেড় হাজার কেজি বই বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বইগুলো ২০২১ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ্য ছিল। বুধবার উপজেলা পরিষদ চত্বর ও পুষ্টকামুরী গ্রামে থাকা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের গোডাউন থেকে এ সব বই বিক্রি করা হয়। পরে বইগুলোর ক্রেতা শরীফ খান দুই ট্রাকবোঝাই করে ঢাকার দিকে নিয়ে যান বলে জানা গেছে।

কর্ণফুলী পেপার মিল নামে একটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে উপজেলা শিক্ষা অফিসে থাকা আনুমানিক ৫৪০ কেজি বই ১৫ টাকা কেজি দরে ক্রয় করে- যা ২০২১ সালে পাঠ্য ছিল। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক এর দপ্তরের-৩৮.০১.০০০০.৩০০.৯৯.০০৩.২০.১০৪ স্মারকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ৩৮.০১.৯৩০০.০০০.০৮.০১০.২২-নম্বর স্মারকের মাধ্যমে মির্জাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ২০২১ সালের পুরনো ৫৪০ কেজি বই কর্ণফুলী পেপার মিলের মনোনীত প্রতিনিধি সেলিম শেখের মনোনীত ব্যক্তি শরীফ খানের নিকট বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের নির্দেশে উপজেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী হিসাবরক্ষক মনির হোসেন, উচ্চমান সহকারী আনসার আলী এবং অফিস সহকারী খান জুয়েল উপস্থিত থেকে ২০২১ সালের বইয়ের সাথে ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের বিপুল পরিমাণ পুরনো বইও তাদের দিয়ে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই বিপুল পরিমাণ বই শরীফ খান দুটি ট্রাকে বোঝাই করে ঢাকায় নিয়ে যান।

যার ওজন কমপক্ষে ১৫০০ কেজি থেকে ২০০০ কেজি হবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপস্থিত কয়েকজন জানান।

অতিরিক্ত বিপুল পরিমাণ বইয়ের টাকা কোথায় জমা হবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোন কিছু বলতে পারেননি মির্জাপুর উপজেলা ও টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিসের পত্রের মাধ্যমে ২০২১ সালের আনুমানিক ৫৪০ কেজি পাঠ্যবই কর্ণফুলী পেপার মিলের মনোনীত ব্যক্তি শরীফ খানের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ৫৪০ কেজি বই দুই ট্রাক ভর্তি করে নেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।

টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে কর্ণফুলী পেপার মিল নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১৫ টাকা কেজি দরে ২০২১ সালের ৫৪০ কেজি পাঠ্যবই ক্রয় করেন। যা কর্ণফুলী পেপার মিলের মনোনীত ব্যক্তির কাছে বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ৫৪০ কেজি বইয়ের টাকাও মহাপরিচালকের কার্যালয়ে জমা হবে বলে তিনি জানান।

২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের বিপুল পরিমাণ বইয়ের টাকা কোথায় জমা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অতিরিক্ত বইগুলো অন্য উপজেলার ছিল বলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাকে জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজুর রহমান জানান, বই বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/এলএ)